খুলনায় নগরজুড়ে পানি সংকট মেটাতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে খুলনা ওয়াসা। প্রকল্পের মাধ্যমে মধুমতী নদী থেকে পানি এনে পরিশোধন করে তা সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু নিম্নআয়ের মানুষের বসবাসের স্থানগুলো (বস্তি এলাকা) ওয়াসার এ পানি সংযোগ থেকে বঞ্চিত। পাশাপাশি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপেও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। ফলে নিরাপদ পানির অভাবে চরম বিপাকে পড়ছেন নিম্ন মধ্যবিত্তরা। পানি অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা সময় শ্রম কাজে ক্ষতি হচ্ছে। বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন এখানকার বাসিন্দারা। গতকাল খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় ‘প্রান্তিক সাধারণ মানুষের নিরাপদ পানির দাবি’ সংক্রান্ত সেমিনারে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। বেসরকারি সংস্থা সিএসও, সুসমাজ ও শুভশক্তি নেটওয়ার্ক সেমিনারের আয়োজন করে। এতে সিএসও নেটওয়ার্কের সভাপতি মিনা আজিজুর রহমান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে মানুষের পানির কষ্ট চলছে ৮-১০ বছর ধরে। প্রতি বছরই পানির কষ্ট বাড়ছে। ওয়াসা যে পানি সরবরাহ করছে তা ব্যবহারের উপযোগী নয়। মাঝে মধ্যেই দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত পানি সরবরাহ করা হয়। এ অবস্থায়ও তার পানির দাম সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তন, খুলনার নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হাসান ডেভিড বলেন, উচ্চবিত্তরা সাবমারসিবল পাম্প বসিয়ে অথবা উচ্চমূল্যে পানি কিনে খেতে পারেন। খুলনায় পানির বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে। কিন্তু বস্তিবাসীর সে সুযোগ নেই। ফলে পানির জন্য তারা অপরিসীম কষ্টে ভুগছেন। ওয়াসা বলছে হোল্ডিং নম্বর না থাকলে পানির সংযোগ দেওয়া যাবে না। কিন্তু বস্তিবাসীর তো ঘরেরই অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি সে হোল্ডিং নম্বর কোথায় পাবে। এক্ষেত্রে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান যেন বিকল্প উপায়ে হলেও তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে সেজন্য জনমত তৈরি করা হচ্ছে। কেসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রকল্পের আওতায় সিটি করপোরেশন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ওয়াসাসহ বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে মতবিনিময় ও গবেষণার মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ৫ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মসূচি বাস্তবায়নে ১০ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ইউএসএইড-এর সহযোগিতায় কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল ‘প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস (পার)’ কর্মসূচির আওতায় সুশীলন ও পরিবর্তন খুলনা কনসোর্টিয়াম এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।