বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সুদিন ফিরছে রাজশাহী রেশমের

৩৫ জাতের মধ্যে ১৫টি মালবেরি (তুঁত) ও ২০টি নতুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

সুদিন ফিরছে রাজশাহী রেশমের

সম্প্রতি রেশমের নতুন ৩৫ জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি মালবেরি (তুঁত) জাতের গাছ ও ২০টি নতুন জাতের রেশম কীট। এর মাধ্যমে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। এতে চাষিরা লাভবান হবেন, উৎপাদনও বাড়বে। বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রাজশাহীতে জার্মাপ্লাজম ব্যাংকে তুঁত জাতের সংখ্যা ৬০ থেকে ৮৪ এবং রেশম কীট জাতের সংখ্যা ৮৫ থেকে ১১৪টিতে উন্নীত হলো। এর ২৭টি উচ্চফলনশীল রেশম কীটের জাত। বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের তথ্যানুযায়ী, রেশম শিল্পের উন্নয়নে পাঁচ বছর আগে একটি প্রকল্প নেয় রেশম বোর্ড। এর নাম ‘রেশম প্রযুক্তি উন্নয়ন বিস্তার ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিকরণ’। এটি শেষ হয়েছে জুন মাসে। প্রায় ৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে রেশমে যুক্ত হয়েছে এসব জাতের গাছ ও কীট। এতে মালবেরি জাতের রেশম গাছের সংখ্যা ৩৮টি ও রেশম কীটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪টিতে। প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন গবেষণা কর্মকর্তা ফারুক আহম্মেদ ও রুমানা ফেরদৌস বিনতে রহমানের যৌথ গবেষণায় এটা সম্ভব হয়েছে। ফলে বছরে হেক্টরপ্রতি তুঁতপাতা উৎপাদন ৪০ থেকে ৪৭ টনে উন্নীত হয়েছে। যা আগে ছিল ৩০ থেকে ৩৭ টন। এখন স্বল্প সময় ও ব্যয়ে মানসম্পন্ন কাঁচা রেশম সুতা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।

চাষিদের তুঁত চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির আশপাশে, রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় বেশির ভাগ তুঁত চাষ হয়

গবেষণা কর্মকর্তা ফারুক আহম্মেদ বলেন, জার্মাপ্লাজম থেকে গবেষণার মাধ্যমে এই ১৫টি মালবেরি তুঁতগাছের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএসআরএম-৬৪, বিএসআরএম-৬৫ ও বিএসআরএম-৭৪ জাতের ট্রায়াল শেষ হয়েছে। সাতটি জাত মাল্টি লোকেশান ইল ট্রায়াল, পাঁচটি সিল ট্রায়াল অবস্থায় আছে। যা চাষিদের দেওয়া হবে। তবে ২০টি নতুন রেশম কীটই ট্রায়াল পর্যায়ে আছে।

বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পরিচালক কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, চাষিদের তুঁত চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির আশপাশে, রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় বেশির ভাগ তুঁত চাষ হয়। তুঁত চাষ জনপ্রিয় করতে সাথী ফসল প্রবর্তন করা হয়েছে। আরও কিছু জাতের কাজ এখনো চলছে। উল্লেখ্য, রাজশাহীর রেশম কারখানা ২০০২ সালে বন্ধ করে দেয় তৎকালীন জোট সরকার। বর্তমান সরকার আমলে ২০১৮ সালে কারখানাটি আবার চালু হয়। রেশমের সুদিন ফেরাতে ১৫৩ কোটি টাকার চারটি প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি পায় রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রেশম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর