রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

পিঁয়াজ সংকট দূর করতে কৃষি বিভাগের গ্রীষ্মকালীন উদ্যোগ

জেলায় ২৬৬ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হেক্টর প্রতি প্রায় ১৯ মেট্রিক টন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

পিঁয়াজ সংকট দূর করতে কৃষি বিভাগের গ্রীষ্মকালীন উদ্যোগ

রাজশাহী অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এই পিঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। দেশে পিঁয়াজ সংকটের ঘাটতি মেটাতে ভালো ফল পাওয়া যাবে। তাই কৃষি বিভাগ স্বল্প খরচে যেন অধিক পরিমাণ পিঁয়াজ উৎপাদন করা যায় সেদিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। নানা দুর্যোগ ও প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও দেশে পিঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে এই গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ। আগাম এই পিঁয়াজ চাষে কৃষককে সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। এখন রোপণ করা পিঁয়াজ নভেম্বর মাস থেকেই তোলা যাবে। আবাদের এ নতুন ধারায় একদিকে দেশের পিঁয়াজ সংকট দূর হবে অন্যদিকে আর্থিকভাবে লাভবান হবে কৃষক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রচলিত মৌসুম অনুযায়ী ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সাধারণত চাষিরা পিঁয়াজের চারা রোপণ করে থাকেন। তখন চাষি আশানুরূপ ফলন পেলেও দাম কম পেয়ে থাকে। এ জন্য খরিপ-২ এ অসময়ে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের চারা উৎপাদন করে বাজারে অস্থিরতা রোধকল্পে এবং চাষিদের লাভবান করার লক্ষ্যে বিনামূল্যে চারা বিতরণ করা হচ্ছে। এতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের।  গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের নমুনা হার্ভেস্টে দেখা যায়, বারি-৫ জাতের গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের উৎপাদন হেক্টর প্রতি প্রায় ১৯ মেট্রিক টন। রাজশাহী জেলায় এবার ২৬৬ হেক্টর জমিতে নতুন পদ্ধতিতে বারি পিঁয়াজ-৫-সহ বিভিন্ন জাতের পিঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে। এ বছর রাজশাহী জেলায় ১৭৯ জন কৃষক প্রায় ২৬৬ হেক্টর জমিতে বারি-৫ জাতের গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের চাষ করেছেন। সরেজমিনে পবা উপজেলার উজিরপুকুর, মাড়িয়া, পান্থাপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এই এলাকার কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলার পবা উপজেলার উজিরপুকুর গ্রামের কৃষক নাজির উদ্দিন বলেন, শীতকালে ব্যাপক পিঁয়াজ চাষ হয়। তবে সময়, চাহিদা ও দাম না পাওয়ায় চাষিকে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। গত বছর তিনি গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন ও দাম পেয়েছেন। তাই তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ করেছেন। ওই জমিতেই পরে আবার শীতকালীন পিঁয়াজের চাষ করবেন বলে জানান তিনি। পবা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরের দিকে পিঁয়াজের বেশি ঘাটতি হয়। এই সময়ের মধ্যে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ উৎপাদন হলে দেশে পিঁয়াজের ঘাটতি আর থাকবে না। পাশাপাশি এই পিঁয়াজের আবাদে সফলতা পেলে তা পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়বে। সারা দেশে এই পিঁয়াজের চাষাবাদ হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই দেশে পিঁয়াজের ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন জানান, জেলায় বিভিন্ন চাষির মাধ্যমে ২৬৬ হেক্টর জমিতে বারি পিঁয়াজ-৫ আবাদ করা হয়েছে।

নতুন পদ্ধতিতে পিঁয়াজ উৎপাদনে রাজশাহী জেলার কৃষিতে যুগান্তকারী পরিবর্তনের এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। লাভ ও ফলনে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর