রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সিলেটে শাস্তির মুখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ২২ নেতা

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় শাস্তির মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ২২ নেতা। এর মধ্যে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের সাতজন এবং দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ১৫ নেতার বিরুদ্ধে নিজ নিজ সংগঠন ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। আগামীকাল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনড় থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উভয় দলের সিলেট জেলা শাখার শীর্ষ নেতারা। সাংগঠনিক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তারা দল থেকে বহিষ্কারও হতে পারেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার নির্বাচন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রবাসী আকদ্দুছ আলী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান। যদিও মুহিবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন চাননি, নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই দাবি করছেন। তবে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার চার ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পাঁচ নেতা। তারা হলেন পূর্ব জাফলং ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু ও মো. শামীম আল মামুন, মধ্য জাফলং ইউপিতে লোকমান হোসেন, পশ্চিম জাফলং ইউপিতে মামুন পারভেজ ও গোয়াইনঘাট সদর ইউপিতে গোলাম রব্বানী সুমন। বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। কেউ যদি শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে প্রার্থী হন কিংবা কাজ করেন, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভা, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার চারটি ইউনিয়নে প্রার্থী হয়েছেন ১৫ জন।

ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গয়াছ মিয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জুয়েল মিয়া ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা মুছলিমা আক্তার চৌধুরী। বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন, যুক্তরাজ্যের নিউহাম বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুমিন খান মুন্না, ওল্ডহ্যামের সভাপতি মো. জালাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মতিউর রহমান সুমন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন ও বিএনপি নেতা সমছু মিয়া।

গোয়াইনঘাট উপজেলার চার ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির ছয় নেতা। তারা হলেন পূর্ব জাফলং ইউপিতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি হামিদুল হক ভূঁইয়া বাবুল, মধ্য জাফলং ইউপিতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শাইদুর রহমান, পশ্চিম জাফলং ইউপিতে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুল মুনিম মুন্সি ও আবদুল মালিক, সদর ইউপিতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এম এ রহীম ও মো. হোসাইন আহমদ।

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপি নেতাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। যদি কেউ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, তফসিল অনুযায়ী আগামীকাল ১৭ অক্টোবর মনোনয়ন প্রত্যাহার, ১৮ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ এবং ২ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর