যোগদানের কয়েক মাসের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির পাশাপাশি গাজীপুর মহানগর এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বিভিন্ন মহলের প্রশংসায় ভাসছেন। পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ধন্যবাদপত্র পাঠিয়েছে জিএমপি কমিশনারকে। স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি, গাজীপুর হয়ে চলাচলকারী যানবাহন চালকদের মুখেও তার প্রশংসা। প্রসঙ্গত, দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ব্যবহার করে চলাচল করে ৩৬ জেলায় মানুষ। মহাসড়কের গাজীপুর অংশে তীব্র যানজটের কারণে এত দিন ভয়াবহ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে মানুষকে। আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত যেতে সময় লাগত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। এখন লাগে ৩০-৪০ মিনিট। নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও এখন আগের চেয়ে ভালো বলে মনে করেন বাসিন্দারা।গত ১১ অক্টোবর জিএমপি কমিশনারকে পাঠানো ধন্যবাদপত্রে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, গাজীপুর অঞ্চলে বাংলাদেশের সর্বাধিক তৈরি পোশাকশিল্প কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা সকাল-সন্ধ্যায় রাস্তা পার হয়ে কারখানায় যাতায়াত করে। এ ছাড়াও বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি মেট্রোপলিটন এলাকার রাস্তায় চলাচল করে। আপনি পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন অঞ্চলের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং ট্রাফিক ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। আপনার এরূপ যুগান্তকারী উদ্যোগের জন্য আপনাকে বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ এবং তৈরি পোশাকশিল্প পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিন মিয়ার মতে, গাজীপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন যে কোনো সময়ের তুলনায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী ট্রাকচালক মকবুল হোসেন বলেন, গাজীপুরের যানজটেই তিন-চার ঘণ্টা নষ্ট করে ফেলত। হঠাৎ করেই যানজট কমে গেছে। মোল্যা নজরুল গত ১৩ জুলাই জিএমপি কমিশনারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। আগে তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও সিআইডিতে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি থাকাকালে সৌদি দূত খালাফ আল আলী, ব্লগার রাজীব, ডা. নিতাই হত্যাকান্ডসহ বেশকিছু ক্লুলেস খুনের রহস্য উদঘাটন করেন। ২০১৫ সালে ‘আগুন সন্ত্রাসের’ এক কঠিন পরিস্থিতিতে তাকে জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখান তিনি। ২০১৬ সালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার তৎপরতায় ধরা পড়ে প্রশ্ন ফাঁসের সর্ববৃহৎ চক্র। ২২ বছরের চাকরিজীবনে সাহসিকতা ও দক্ষতার জন্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম (বার) ও পিপিএম (বার) অর্জন করেন একাধিকবার। জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরকে মাদক, অপরাধ ও? যানজটমুক্ত নিরাপদ সিটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এটা টিমওয়ার্ক। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের টিম কাজ করছে। আশা করছি, আগামী এক বছরের মধ্যে গাজীপুর মহানগরকে পুরোপুরি নিরাপদ বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করতে পারব।