সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

পাঁচ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

বরিশাল বিভাগে ৩ হাজার ৯৭৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

পাঁচ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নপচাপ সিত্রাং-এর প্রভাবে বরিশালসহ উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দুর্যোগ আঘাত হানলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি এবং দ্বীপ ও চরসমূহে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্লাবিত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এতে কাঁচা ঘরবাড়ি, ফসল এবং গাছপালা ল-ভ- হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন উপকূলের লাখো মানুষ। বিপদগ্রস্ত মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)। এদিকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে উপকূলীয় মানুষকে নিরাপদে নেওয়ার জন্য বিভাগে ৩ হাজার ৯৭৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা ছাড়াও তাদের জন্য সুপেয় পানি, শুকনা খাবার এবং ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার। গতকাল দুপুর ২টায় আবহাওয়া বিভাগের ৫ নম্বর পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি দুপুরে পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হওয়া বয়ে যেতে পারে। যা দমকা হাওয়ায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর প্রভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। দ্বীপ ও চরসমূহে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্লাবিত হতে পারে। নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকায় স্থানীয় ও অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বরিশাল নদীবন্দরের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. কবির হোসেন জানান, ২ নম্বর সতর্ক সংকেতের কারণে ৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্যর লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে বরিশালে ৬৫ ফিটের কম দৈর্ঘ্যরে লঞ্চ নেই। সিডরের চেয়েও শক্তিশালী সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের খবর ছড়িয়ে পড়ায় উপকূলীয় এলাকার মানুষের মাঝে তীব্র আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় হলে কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং ফসল ল-ভ  - হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। এ কারণে দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে নিরাপদে গবাদি পশুসহ সরিয়ে নেওয়া এবং তাদের জন্য শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া জানান, ৪ নম্বর সিগন্যাল হলে সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা পতাকা উত্তোলন এবং মাইকিং করবে। এ লক্ষ্যে বিভাগে ৩২ হাজার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। আপাতত স্বেচ্ছাসেবকরা লোকমুখে সম্ভাব্য দুর্যোগের বিষয়টি জনগণের মাঝে প্রচার করছে। দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্যও স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। এদিকে সম্ভাব্য দুর্যোগের আশঙ্কায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা ও ৪০ উপজেলায় ৩ হাজার ৯৭৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন-উল আহসান। তিনি জানান, সেখানে বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বরগুনা এবং পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসনকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সতর্ক রাখা হয়েছে। এ লক্ষ্যে বিভাগে একটি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। বিভাগীয় প্রশাসন সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং করছে বলে তিনি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর