সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বাগযুদ্ধে উত্তপ্ত রাজনীতি খুলনায়

পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, পরস্পরকে দোষারোপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

বাগযুদ্ধে উত্তপ্ত রাজনীতি খুলনায়

খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষ হলেও দুই দলের বাগযুদ্ধে রাজনীতিতে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। গণসমাবেশের নামে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে খুলনা আওয়ামী লীগ। নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার পতনের নামে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। এদিকে বিকালে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে গণসমাবেশ বানচাল করতে শাসক দলের ছাত্রলীগ, যুবলীগ নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ হকিস্টিক, রামদা, লোহার রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে। একই সঙ্গে গণপরিবহন বন্ধ, পুলিশ প্রশাসন ব্যবহার করে গ্রেফতার আতঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, খুলনা রেলস্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার রাতে বিএনপির ১৫০ জন নেতা-কর্মীর নামে মামলা করেন স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার। তিনি জানান, রেলস্টেশনে প্রধান ফটকে অবস্থান করা নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সরে যেতে বললে উত্তেজিত হয়ে দরজা-জানালার কাচ ভাঙচুর করে। এ ছাড়া গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে গতকাল বিকালে বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ধর্মবিষয়ক সম্পাদক কাজী মোবাক্ষের। মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ে ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, ফুলতলা, দৌলতপুর, নতুন রাস্তা মোড়, বৈকালী শিববাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। বিএনপি কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। এখন উল্টো বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ২২ অক্টোবর দিনভর সশস্ত্র অবস্থায় মোটরসাইকেল মহড়া, অশালীন গালিগালাজ দিয়ে স্লোগান দিয়েছে। তাদের হামলায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপির মিথ্যাচার, সমাবেশের নামে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ বলেন, বিএনপির স্থানীয় দুই গ্রুপের কোন্দলে নিজেদের মধ্যে হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় তারা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়েছে, রেলস্টেশন ভাঙচুর ও সহিংস কার্যকলাপ চালিয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরে প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। তারা নতুন রাস্তার মোড়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের আহত করেছে। এখন তারাই গণসমাবেশে আওয়ামী লীগ বাধা দিয়েছে বলে মিথ্যাচার করছে।

খুলনায় বিএনপির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা বাতিলের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহানগর শাখার আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, খুলনায় মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহিরের মালিকানাধীন আছিয়া সি ফুডে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। খানজাহান আলী থানার বিএনপি নেতা-কর্মী সমাবেশে আসার পথে বিডিআর ক্যাম্পের সামনে তাদের ওপর হামলা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। বৈকালীতে বিএনপির অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে। কিন্তু এসব ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিএনপির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর