ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে খুলনায় উপকূলীয় এলাকায় দেড় হাজারের বেশি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে ও মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। তবে প্রাণহানি বা বেড়িবাঁধ ভেঙে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলার কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপে প্রায় ৮ হাজার মানুষ রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে নির্ঘুম রাত কাটান। গতকাল সকালে তারা বাড়ি ফিরে যান। কয়রার হরিণখোলা, শাকবাড়িয়া, গাতিরঘেরি ও হরিপুর বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হরিণখোলা পয়েন্টে ৭০ মিটার, কপোতাক্ষ নদের পাড়ে শাকবাড়িয়ায় ৩ কিলোমিটার, গাতিরঘেরি ১০ মিটার ও হরিহরপুরে ১৫০ মিটার বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। সুতির বাজার সংলগ্ন এলজিইডি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের চাপে বাঁধ ভেঙে যে কোনো সময় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাস বলেন, সিত্রাংয়ের আঘাতে দাকোপে ৫৮১টি কাঁচাঘর ভেঙে পড়েছে। ভারী বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে পানি জমেছে। কয়রায় ২৫০টি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে ও ৬০টি স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। পাইকগাছায় ২০৭টি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ১১২টি ঘের কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাইকগাছায় প্রায় ৭৫৫ বিঘা চিংড়ি ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১৭ হাজার ৯৪২ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবজি, সরিষা, পেঁপে কলাসহ বিভিন্ন রবিশস্য খেতে পানি জমে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি খুলনার জেনারেল ম্যানেজার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের লাইনের ওপর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। কয়েকটি খুঁটিও ভেঙেছে। সেগুলো চিহ্নিত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। পাউবো খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় জিও ব্যাগ মজুদ রাখা হয়েছে। কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।