বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সমন্বয়হীনতায় চরম ভোগান্তি খুলনায়

যেখানে সেখানে পার্কিং বিশৃঙ্খলা সড়কে

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় যানজট এখন অনেকটাই স্থায়ী রূপ নিয়েছে। সড়কে অব্যবস্থাপনা, বিশৃঙ্খলা, নজরদারির অভাব ও অনিয়মের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিমত নাগরিক নেতাদের। কেডিএ এভিনিউতে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের সড়কে সর্বক্ষণ যানজট লেগে থাকে। সেখানে সড়কের অর্ধেকজুড়ে ব্যক্তিগত গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল রাখা হয়। ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে ওই হাসপাতাল। নিজস্ব পার্কিং থাকলেও সেখানে আসা রোগী ও স্বজনদের যানবাহন রাখতে দেওয়া হয় না। ফলে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা হয়। এতে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়ে। একইভাবে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের সামনে সড়কে এলোমেলো রাখা হয় যাত্রীবাহী বাস। বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন রুটের বাস বের হয়ে আরও যাত্রী নেওয়ার জন্য সোনাডাঙ্গা থানা, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস, এম এ বারি সড়কে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। এতে দিনের অধিকাংশ সময় ওই এলাকায় যানজট লেগে থাকে। মাঝেমধ্যে যানজট বাসস্ট্যান্ড এলাকা ছাড়িয়ে যুব উন্নয়ন অফিস ও সোনাডাঙ্গা-শিববাড়ী মজিদ সরণি পর্যন্ত পৌঁছায়। নাগরিক নেতারা বলছেন, নগরীতে যানজট নিরসনে নেওয়া উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় ঘাটতি রয়েছে। কেসিসি, কেডিএ ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয় নেই। কেডিএর অনুমতি ছাড়াই বহুতল ভবন গড়ে উঠছে। নজরদারি না থাকায় বহুতল ভবন, মার্কেট, হাসপাতাল-ক্লিনিকের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা রাখা হয় না। যানজট নিয়ন্ত্রণ বাদ দিয়ে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র যাচাই ও জরিমানায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশকে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, বাসস্ট্যান্ড থেকে সোনাডাঙ্গা সড়কে একটা বাস যখন মোড় নিতে যায়, তখন ২-৩ মিনিট দেরি করলেই আধা কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়। মনিটরিংয়ের অভাবে এখানে সড়কে এলোমেলো বাস রেখে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়। নিয়ম না মানা, সড়ক দখল করে পার্কিং, উন্নয়ন কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ও অতিরিক্ত ইজিবাইকে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, নগরীতে বেশির ভাগ ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। খুলনার ডাকবাংলো মোড়, ক্লে রোড, পিকচার প্যালেস মোড়ের ফুটপাত দখল ও তুলনামূলক সরু সড়কে যানজটে ভোগান্তি বাড়ছে।

কেসিসি সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ব্যস্ততম ময়লাপোতা মোড়, সোনাডাঙ্গা, শিববাড়ী, বয়রার মোড়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, বৈকালি গোয়ালখালী, নতুন রাস্তা, দৌলতপুর মহসিন মোড়সহ ২২ পয়েন্টে প্রশস্তকরণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এতে যানজট কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন কেসিসির প্রধান পরিকল্পনাবিদ আবির-উল জব্বার।

সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, আট হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স আছে। এর বাইরে থাকা অবৈধ ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, যানজট নিরসনে সক্রিয় ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে মাঝেমধ্যেই অভিযান চালানো হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর