বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নিউমোনিয়ায় বছরে ২৫ হাজার শিশুর প্রাণহানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউমোনিয়ায় বছরে ২৫ হাজার শিশুর প্রাণহানি

রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি (হাইপক্সেমিয়া) বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের অত্যন্ত জটিল একটি সমস্যা। দেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের অবকাঠামো অনুযায়ী মাধ্যমিক স্তরের স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রে নিউমোনিয়া নিয়ে আসা শিশুর প্রায় ৪২ শতাংশই হাইপক্সেমিয়ায় ভোগে। যার ফলে দেশে প্রতি বছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৫ হাজার শিশুর প্রাণহানি হয়, যা সম্পূর্ণ প্রতিরোধ যোগ্য। গতকাল রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআরবি) বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উপলক্ষে ‘মেডিকেল অক্সিজেন নিরাপত্তা’ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিডিডিআরবির মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী আহমেদ এহসানুর রহমান। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৭ কোটি ৩০ লাখ মারাত্মক অক্সিজেন ঘাটতিতে ভোগেন। যার মধ্যে শিশুই ৩ কোটি ২০ লাখ। হাইপক্সেমিয়ায় আক্রান্ত যে কোনো রোগীর জন্য চিকিৎসা হিসেবে অক্সিজেন থেরাপি প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরিস্থিতিতে হাইপক্সেমিয়া ঘটতে পারে- শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত নবজাতক থেকে শুরু করে নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়া, সেপসিস এবং যক্ষ্মা আক্রান্ত শিশু, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), হৃদরোগ এবং হাঁপানিসহ আরও অনেক। এনেসথেশিয়াসহ প্রায় সব ধরনের বড় অস্ত্রোপচারকালে অজ্ঞান করার সময়ও মেডিকেল অক্সিজেন অপরিহার্য।

২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে পরিচালিত আইসিডিডিআরবির নেতৃত্বাধীন আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৬০টি জেলা হাসপাতালের মধ্যে ৭২ শতাংশ হাসপাতালে পালস অক্সিমেট্রি যন্ত্রটি রয়েছে এবং মাত্র ৭ শতাংশের ক্ষেত্রে আর্টারিয়াল ব্লাড গ্যাস এনালাইসিস (রক্তে অক্সিজেন, কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ, অক্সিজেনের ঘনত্ব, অ্যাসিড-ক্ষারের ব্যালেন্স ইত্যাদি পরিমাপ করার পরীক্ষা) করার ব্যবস্থা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে আইসিডিডিআরবির নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস ডিভিশনের সিনিয়র বিজ্ঞানী (হাসপাতাল) ডা. মোহাম্মাদ জোবায়ের চিশতি বলেন, যখন কডিড-১৯ মহামারি বিশ্বে আঘাত হানে, তখন হাসপাতালে রোগীদের একটি বড় ঢেউ ভর্তি হয়েছিল অক্সিজেনের প্রয়োজনে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পালস অক্সিমিটার এবং বাবল সি-প্যাপের মতো স্বল্প মূল্যের উদ্ভাবনমূলক হস্তক্ষেপসমূহকে গ্রহণ করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেনে ইউএসএইডের ইভালুয়েশন অ্যান্ড লিনিং অ্যাডভাইজার ও সিনিয়র রিসার্চার ড. কান্তা জামিল, ইউএসএইডের ড. ফিদা মেহরান, আইসিডিডিআরবির সিনিয়র ডিরেক্টর (এমসিএইচডি) ডা. শামস এল আরেফিন, হেড অব রিসার্চ (এমসিএইচডি) ড. কামরুন নাহার, ডাটা ফর ইমপ্যাক্টের কান্ট্রি লিড ডা. মিজানুর রহমান এবং নলেজ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট সুষ্মিতা খান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর