মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সিলেটে অপরাধে জড়াচ্ছে পুলিশ

মাদক দিয়ে ফাঁসানো, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ, অ্যাকশন শুরু

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে অপরাধে জড়াচ্ছে পুলিশ

সিলেটে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন পুলিশের অসাধু সদস্যরা। মাদক দিয়ে ফাঁসানো, চাঁদাবাজি, অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাভঙ্গসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ইতোমধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের পাশাপাশি আইনানুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার (এসএমপি) নিশারুল আরিফ। এসএমপি সূত্র জানায়, গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতরের পিআইও শাখায় কর্মরত পরিদর্শক আবু সায়েদের ছেলে সিলেট মহানগরীর মেজরটিলার বাসিন্দা সাইফুর রহমান আসাদ (১৮) তার এক বন্ধুকে নিয়ে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে বেড়াতে যান। এ সময় এসএমপি পুলিশ লাইনসের তিন পুলিশ সদস্য আসাদ ও তার বন্ধুকে জাপটে ধরেন। তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে পুলিশ সদস্যরা দাবি করেন ইয়াবা ট্যাবলেট পেয়েছেন। কিন্তু আসাদ তার ব্যাগে ইয়াবা থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে এর প্রতিবাদ করে। আসাদ নিজেকে পুলিশ পরিদর্শকের  ছেলে পরিচয়ও দেয়। সে ফোনে বিষয়টি তার বাবাকেও অবগত করে। আসাদের বাবা আবু সায়েদ ফোনে বিষয়টি মহানগর পুলিশের কর্মকর্তাদের জানালে পুলিশ গিয়ে আসাদ ও তার বন্ধুকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে। রাতে তাদের মুচলেখা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।  ঘটনাটি এসএমপি কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ জানতে পেরে পুলিশ লাইনসের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ফোর্স) সালেহ আহমদকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্ত শেষে গত ২৪ নভেম্বর কমিশনার বরাবরে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তদন্তে তিন কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে পুলিশের অভিযুক্ত তিন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন-  কনস্টেবল মো. ঝুনু হোসেন জয়, ইমরান মিয়া ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। এদিকে, গত ৩ ডিসেম্বর সিলেট মহানগর পুলিশ লাইনসে দুই পুলিশ সদস্যের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। ওইদিন নায়েক পদমর্যাদার এক পুলিশ শটগান দিয়ে আঘাত করে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার এক সদস্যের মাথা ফাটিয়ে দেন। ঘটনার পরদিন দুই     পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই দুজন  হলেন- এএসআই মো. রুবেল মিয়া ও নায়েক প্রণজিত।

এসএমপি কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ জানান, শাহজালাল মাজার এলাকার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তদন্তও চলছে। ঘটনার সময় ইয়াবা ঠিকই পাওয়া গেছে। কিন্তু ইয়াবাগুলো কার কাছ থেকে পাওয়া গেছে তা নির্দিষ্ট হয়নি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ লাইনসে মারামারির ঘটনায়ও বিভাগীয় মামলা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশ কোনো অপরাধীকে ছাড় দেয় না। অপরাধী পুলিশ সদস্য হলেও তারা কোনো ধরনের ছাড় পাবে না। আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর