মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নিউরো রোগীর ৩৫ শতাংশই ‘নিউরো স্পাইন’ সমস্যার

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম    

নিউরো সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ রোগী নিউরো স্পাইন (মেরুদন্ড) সমস্যায় ভুগছেন। একই সঙ্গে জন্মগত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান প্রায় ১৫ শতাংশ রোগী, দুর্ঘটনাজনিত কারণে যান ২০ থেকে ২৫ শতাংশ এবং ঘাড় বা বিভিন্ন নিউরো সমস্যা নিয়ে আসেন আরও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ রোগী। নিউরো স্পাইন সোসাইটি অব বাংলাদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। নিউরো সার্জনরা বলছেন, বর্তমানে নিউরো সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের চিকিৎসা বাংলাদেশে করানো সম্ভম। এর জন্য দরকার দক্ষ জনবল এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। জনবল কম থাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে এ বিভাগ চালু করা যাচ্ছে না। ফলে রোগীও গুণগত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে মেরুদন্ডের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। কিন্তু এ বিভাগেও আছে জনবল ও শয্যা সংকট। এ বিভাগে বর্তমানে শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, কিন্তু প্রতিনিয়তই রোগী ভর্তি থাকে ২১৫ থেকে ২২০ জন। একজন ভর্তি রোগীর প্রয়োজনীয় অপারেশনের তারিখ পেতে সময় লাগে এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত।

এরই মধ্যে অনেক রোগীর অবস্থা সংকটাপন্নও হওয়ার উপক্রম হয়। তাছাড়া এ বিভাগে পাঁচজন অধ্যাপকের মধ্যে চারটি পদই খালি, পাঁচজন সহযোগী অধ্যাপক পদের জন্য একজনও নেই। সাত সহকারী অধ্যাপকের মধ্যে আছেন মাত্র তিনজন। এমন সংকট নিয়েই চলছে বিভাগটি।   

চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, হাসপাতলের নিউরো সার্জারি বিভাগে জনবল ও শয্যা সংকট আছে। তবুও আমরা দিন রাত সমানেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। নিউরো সার্জারি বিষয়ে সমন্বিত চিকিৎসা চলছে। তবে আমরা মনে করি, চমেক হাসপাতালের পাশাপাশি চট্টগ্রামের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালও যদি নিউরো সার্জারি বিভাগ চালু করে, তাহলে মানুষের চিকিৎসাসেবার পরিধি আরও বাড়বে।

নিউরো সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. মাজেদ সুলতান বলেন, চমেকে পৃথকভাবে নিউরো স্পাইন বিভাগ চালুর সরকারি অনুমোদন পাওয়া গেছে। এটি একটি সুখের খবর। বিভাগটি চালুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। নিউরো স্পাইন সোসাইটি অব বাংলাদেশ এবং নিউরো সার্জারি বিভাগের তৎপরতায় বিভাগটি চালু করা হচ্ছে। এটি চালু হলে নিউরো স্পাইনের রোগীরা উন্নত চিকিৎসা পাবেন।

জানা যায়, দেশে বর্তমানে নিউরো স্পাইনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা আছে। এরপরও অনেক রোগী অসচেতনতার কারণে বিদেশে এ চিকিৎসার জন্য যান। মেরুদন্ডের কোনো সমস্যা হলেই তার প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। আর এ সমস্যার চিকিৎসা বেশ জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু মেরুদন্ডের ছোট সমস্যা নিয়েও সাধারণ মানুষ বিদেশ পাড়ি দিচ্ছেন। তবে বাংলাদেশেও এখন মেরুদন্ডের শতভাগ চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করছেন নিউরো সার্জনরা।  

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর