খুলনার আড়ংঘাটায় পুলিশ পরিচয়ে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণী স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তারা ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেন। অভিযানে র্যাব ওই ভিডিওচিত্রসহ একটি মোবাইল ফোন সেট জব্দ করেছে। তাতেই ধর্ষণকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আড়ংঘাটা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) তপন কুমার সিংহ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, আসামি বেল্লাল মোড়ল (৪০), আজিজুর রহমান (৪০) ও জিহাদ মুন্সী (২৪) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৫ ডিসেম্বর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অন্য আসামি রাসেলের (২২) কাছে ধর্ষণের ভিডিও পাওয়া গেলেও তিনি ওই ঘটনায় জড়িত নন। আসামি বেল্লাল ও আজিজ পেশায় ইজিবাইক চালক, জিহাদ মুন্সী বেকারি শ্রমিক আর রাসেল স্থানীয় কলেজে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
র্যাবের সিনিয়র এএসপি পহন চাকমা জানান, ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভিকটিম ও তার স্বামী হাঁটতে হাঁটতে আড়ংঘাটা বাইপাস এলাকায় যান। সেখানে চার ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে এ দম্পতিকে বেল্লাল মোড়লের আড়ংঘাটার বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর স্বামীকে আটকে রেখে তিন আসামি ভিকটিমকে ধর্ষণ করেন ও একজন ভিডিওচিত্র ধারণ করেন।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, আসামিরা ধর্ষণের পর ভিকটিমকে একটি মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন। যা দিয়ে পরবর্তীতে তাকে ব্ল্যাকমেল করার পরিকল্পনা ছিল। র্যাব মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই আসামিদের গ্রেপ্তার করে।এদিকে স্থানীয় একটি পক্ষ পুলিশের সহায়তায় ধর্ষণের মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা বলছে, ভিকটিম আসামিদের পূর্বপরিচিত এবং দেনা-পাওনা কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে এর প্রতিবাদ জানিয়ে ভিকটিমের স্বামী বলেন, পুলিশ পরিচয়ে আসামিরা তাদের আড়ংঘাটা বাইপাস থেকে বেল্লাল মোড়লের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাকে বাড়ির বাইরে রেখে তার স্ত্রীকে ঘরের ভিতরে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনজন ধর্ষণ করেন। পরে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে তার স্ত্রী পুরো ঘটনা জানালে তিনি অসুস্থ স্ত্রীকে রাতেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করান।পহন চাকমা আরও জানান, ঘটনাস্থল বেল্লালের এক তলা বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে র্যাব অভিযান চালিয়েছে। ধর্ষণের ভিডিও উদ্ধার হয়েছে ও ঘটনাস্থলে আসামিদের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভিকটিমের আগের পরিচয় যা-ই থাকুক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ইন্সপেক্টর তপন কুমার সিংহ জানান, ঘটনার পর নতুন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।