শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রার্থীদের দাখিলের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি খরচ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

প্রার্থীদের দাখিলের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি খরচ

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আর মাত্র তিন দিন বাকি। প্রার্থীরা নির্বাচনী ব্যয়ের যে হিসাব দাখিল করেছেন তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি খরচ করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে গতকাল ইভিএমে মক ভোটিং শুরু হয়েছে। তবে এতে ভোটারদের সাড়া লক্ষ্য করা যায়নি। নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর ভোর ৬টা থেকে ২৯  ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্রসহ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ২৭ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত এই নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক ও পিকআপ চলাচল করতে পারবে না। ২৫ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ২৮ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করে তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করা যাবে। তবে ভোট কেন্দ্রে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করা যাবে না। এ ছাড়া সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের জন্য কোনো স্টিকার ইস্যু করা হবে না। সাংবাদিকরা ভোট গণনা কক্ষে ভোট গণনা দেখতে পারবেন, তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না।

নির্বাচন অফিসে দাখিল করা প্রার্থীদের আয়-ব্যয়ের হিসাব সূত্রে জানা গেছে, মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পোস্টার বাবদ খরচ দেখিয়েছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০, ক্যাম্প ৩৩টির প্রতিটিতে খরচ ৩ হাজার করে ৮৮ হাজার, কেন্দ্রীয় ক্যাম্প একটিতে খরচ ৫৫ হাজার টাকা। নিজের এবং এজেন্টদের খরচ ৬০ হাজার, প্রিন্টিং খরচ ১ লাখ ১৮ হাজার, ডিজিটাল ব্যানার বাবদ খরচ ২৪ হাজার ৭৫০ টাকা। পথসভা ৬৬টি, ১১০০ করে ৭২ হাজার ৬০০ টাকা এবং কর্মী সংখ্যা ২০০ জনের প্রতিদিন ১০০ করে ৩ লাখ টাকা নির্বাচনে খরচ করবেন বলে উল্লেখ করলেও এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি খরচ করেছেন তিনি- এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।

আওয়ামী লীগের ডালিয়া পোস্টার বাবদ ১ লাখ, ক্যাম্প বাবদ ১ লাখ ৬৫ হাজার, কেন্দ্রীয় ক্যাম্পে ১ লাখ, এজেন্ট বাবদ ৪০ হাজার, মুদ্রণ বাবদ ১ লাখ ৭৫ হাজার, ব্যানার বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যানবাহন ভাড়া ও প্রচার বাবদ ২ লাখ টাকা নির্বাচনে খরচ দেখানো হলেও তিনি কয়েক গুণ বেশি খরচ করছেন বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ১৩৫ জন বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। ওইসব প্রার্থী নির্বাচনে একেকজন ৫ লাখ টাকার কয়েক গুণ বেশি খরচ করেছেন। খরচ নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন অফিসের কার্যকর ভূমিকা নেই বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

রংপুর মহানগর সুজনের সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ২০১০ সালে নির্বাচন কমিশন একটি আইন করেছে, এতে কোন নির্বাচনে কোন প্রার্থী সর্বোচ্চ কত টাকা ব্যয় করতে পারবেন তা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ওই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রার্থীরা শতগুণ বেশি টাকা খরচ করছেন। প্রার্থীরা নির্বাচন অফিসে ব্যয়ের যে হিসাব দিয়েছেন, তার থেকে অনেক অনেক গুণ বেশি টাকা খরচ করছেন। অনেকে কালো টাকা ছড়িয়ে অবৈধভাবে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন অফিসের একটি ভূমিকা থাকা দরকার ছিল। কিন্তু তারা প্রার্থীদের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা পালন করেননি।

এদিকে গতকাল নগরীর বিভিন্ন কেন্দ্রে ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যে মক ভোটিং শুরু হয়েছে। দুপুরে নগরীর আদর্শপাড়ায়, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাবাটসনগঞ্জসহ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচন অফিসের লোকজন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম। নির্বাচন কর্মকর্তা আফতাব হোসেন বলেন, নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে মক ভোটিং শুরু হয়েছে। শনিবারও এটা চলবে। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর