শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় রমেক

উত্তেজনার আসল রহস্য টেন্ডারবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

উত্তরের স্বাস্থ্যসেবার পাদপিঠ হিসেবে পরিচিত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েকদিন থেকে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরিচালকের বদলিসহ বিভিন্ন দাবিতে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠছে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে টেন্ডারবাজি, আধিপত্য বিস্তারে একটি সিন্ডিকেট মরিয়া এমন তথ্য উঠে এসেছে। ঠিকাদার, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কয়েকজন নেতা এবং এক চিকিৎসকের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালে আধিপত্য বিস্তার করে চলছে।

জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে সিপিটুর (সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইউনিট) গাইডলাইন ও সিডিউল অনুযায়ী প্রায় ১৫ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ওই টেন্ডারে পছন্দসই ঠিকাদারকে কাজ না পাওয়ার শঙ্কায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বিক্ষোভ আন্দোলনে মাঠে নামানো হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চার ঠিকাদারের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা যুগ যুগ ধরে মেডিকেলের বিভিন্ন টেন্ডারের কাজ পেয়ে আসছেন। এ ছাড়া এক চিকিৎসকের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে আরেকটি সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটে কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক রয়েছেন। তারা হাসপাতালের বিভিন্ন কাজে সবসময় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। টেন্ডার থেকে শুরু করে সব কিছুই তারা নিয়ন্ত্রণ করছেন।

জানা গেছে, সিপিটু গাইডলাইন অনুযায়ী এগারোটি গ্রুপে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ১১টি গ্রুপ হচ্ছে- মেডিসিন, সার্জিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট, গজ ব্যান্ডেজ তুলা, লিলেন (বিছানা, বালিশ কভার), কেমিক্যাল রি এজেন্ট, হাসপাতাল আসবাবপত্র, মনিহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী, মুদ্রণ ও ছাপাখানা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সামগ্রী, আউটসোর্সিং (জনবল) ও ভারি যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করার কথা রয়েছে।

একটি সূত্রে উঠে এসেছে যারা টেন্ডারে অংশগ্রহণ করছেন তাদের মধ্যে একজন বাদে বাকিদের লাইসেন্স এবং কাগজপত্র সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন থেকে দাপটের সঙ্গে যারা টেন্ডারের কাজ পেত এবার তাদের মধ্যে কাজ না পাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। ফলে ঠিকাদার, ডাক্তার ও কর্মচারী এই তিন সিন্ডিকেট এক হয়ে পরিচালকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। এক পর্যায়ে পরিচালক শরীফুল আমীনকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু হাসপাতালের দায়িত্ব কাকে বুঝিয়ে দিতে হবে এমন কোনো নির্দেশনা না আসায়, তিনি দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে পারছেন না।

সদ্য বদলির আদেশপ্রাপ্ত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরীফুল হাসান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর আমাকে এখানে পরিচালক হিসেবে পাঠিয়েছেন। এখানেও সততার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি আসাতে অনেকের দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যাদের আঁতে ঘা লেগেছে তারাই এভাবে আন্দোলন করিয়ে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর