শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দিলরুবা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেনীর সোনাগাজীতে বিয়ে হয়েছিল দিলরুবা আক্তারের (৩০)। ১২ বছরের এক মেয়ে, আর সাত বছরের ছেলের মা তিনি। সংসারে বছর পাঁচ যেতে না যেতেই অবর্ণনীয় নির্যাতন শুরু হয় তার ওপর। তার স্বামী হানিফ মিঞা (৪০) এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। স্বামীর এই সম্পর্কে বাধা একমাত্র দিলরুবা। যে কারণে নানা ছুতোয় মারধর ও নির্যাতন চলে তার ওপর। এমনকি হত্যার হুমকিও পান সেই হানিফের কাছ থেকে। গত ২ নভেম্বর ফেনী সদর থানায় হানিফের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দিলরুবা। গ্রেফতারের পর এক মাস জেলও খাটেন হানিফ। বেরিয়ে এসে দিলরুবাকে মারতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। প্রাণ বাঁচাতে দিলরুবা কখনো মায়ের বাসায়, কখনো মামাদের বাসায়, আবার কখনো চাচার বাসায় আশ্রয়ে থাকছেন। তার মেয়েটির ঠাঁই হয়েছে ফেনীর একটি এতিমখানায়। আর ছেলেটিকে সঙ্গে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। এ প্রতিবেদকের কাছে দিলরুবা যখন এসব বর্ণনা দিচ্ছিলেন তখন তার ঠাঁই হয়েছে রাজধানীর রূপনগরের একটি বাড়ির চিলেকোঠায়। এটি তার এক চাচার বাড়ি। চাচা সপরিবারে থাকেন কানাডায়। এখন ভাতিজির প্রাণরক্ষার জন্য আশ্রয় দিয়েছেন। প্রবাসী চাচাও বুঝতে পারছেন না ভাতিজিকে কীভাবে প্রাণে বাঁচাবেন। গতকাল রূপনগরে চাচার বাসায় নিজের ওপর নির্যাতনের কথা জানিয়ে বলেন, তার স্বামী হানিফের আকাশ ইন্টারন্যাশনাল নামে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা আছে। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিলে ব্যবসা শুরু করেন হানিফ। কিছুদিন পর একই এলাকার সৌদি প্রবাসী মনজুর সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে হানিফের। এক পর্যায়ে মনজুর স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন হানিফ। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ালে দিলরুবার ওপর শুরু হয় নির্যাতন। সর্বশেষ ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে বেধড়ক মারপিট করেন হানিফ। আহতাবস্থায় গত ৫ অক্টোবর তাকে ফেনীর মেডিনোভা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২০ অক্টোবর দিলরুবার ওপর ফের হামলা করেন হানিফ। এ ঘটনায় গত ২ নভেম্বর ফেনী সদর থানায় মামলা করেছেন দিলরুবা।

 মামলার বিষয়টি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে দিলরুবার কাছে তালাকের নোটিস পাঠান হানিফ।

একই সঙ্গে তাকে প্রাণনাশের নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। প্রাণভয়ে দিলরুবা এখন আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় বাসায় পালিয়ে থাকছেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর