শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রতারণার মাধ্যমে আমেরিকা পাঠানোর চেষ্টা, গ্রেফতার ৭

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধভাবে আমেরিকা প্রেরণ ও অভিবাসনগামী প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর ডিবি। তারা হলেন- মো. রেজাউল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মো. আজিজুর রহমান, মো. খায়রুল কবির, সাদেকুর রহমান, মো. শাহরিয়ার হোসেন বিক্রম ও মুহাম্মদ আবু বক্কর। গতকাল রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ডিবি বলছে, এই সাতজনের মধ্যে রেজাউল মূলহোতা। ১.২ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম ভুয়া ক্রয় আদেশ দেখিয়ে আমেরিকা কোম্পানিতে ভুয়া ই-মেইল করে ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্টের মাধ্যমে বিদেশ পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। ৭-৮ বছর ধরে এ ধরনের প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রেজাউল। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগের উপকমিশনার বলেন, সারা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সবুজ আলম নামে একজন আমেরিকান সিগন্যাল করপোরেশনকে ভুয়া ডিরেক্টরেট জেনারেল ডিফেন্স পারচেজ (ডিজিডিপির) ক্রয় আদেশ উপস্থাপন করে। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস ডিজিডিপি ক্রয় আদেশ যাচাই-বাছাই করে জানতে পারে, নথিতে উল্লিখিত সিলসমূহ জাল, নথিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তি (মেজর মো. বসির আহমেদ) পাঁচ বছর আগে ডিজিডিপিতে চাকরি করতেন। এ ছাড়া টেন্ডার নং- ২১১.৩৯৯এফ.২২ তারিখ ২০-০৩-২২ নথিটি জাল। সারা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি জাল ডিজিডিপি চিঠি তৈরি করে এবং জেনেশুনে মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে প্রতারণা করে।

সারা এন্টারপ্রাইজ ১.২ মিলিয়নের অধিক মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় চুক্তির সঙ্গে জড়িত একটি কোম্পানি এবং মার্কিন কোম্পানিকে ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য ছয় ব্যক্তির ভিসা অনুমোদনের গ্যারান্টি দেওয়ার অনুরোধ করে। মূলত ওই ছয় ব্যক্তির প্রশিক্ষণ গ্রহণের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না এবং তারা এই প্রতারণামূলক কাজটি ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অভিবাসনের জন্য মার্কিন ভিসা পেতে ব্যবহার করেছিল। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঢাকার মার্কিন দূতাবাস গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২০টি জাল সিল, দুটি সিল প্যাড, নয়টি পাসপোর্ট, চারটি ভুয়া আইডিকার্ড, একটি পেনড্রাইভ, দুটি মোবাইল ফোন ও বিপুল পরিমাণ জাল কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

সাইবার কর্মকর্তা তারেক আরও বলেন, গ্রেফতার রেজাউল ২০১১-১২ সালে নিজ কোম্পানি ডিফেন্স আইকনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লোকাল টেন্ডারে চাল-ডাল ইত্যাদি সরবরাহ করত। সরকারি কাজের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সে প্রতারণার এই কৌশল রপ্ত করে। সে ডিজিডিপির ক্রয় পদ্ধতি সম্পর্কে বিশেষভাবে পারদর্শী। পরবর্তীতে তার এই পারদর্শিতার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২০১৪-১৫ সাল থেকে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে এ ধরনের প্রতারণা করে আসছে। প্রতারক রেজাউল বিশ্বের বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির সঙ্গে পূর্বে এ ধরনের বহু প্রতারণা করেছে। রেজাউল একাধিক পরিচয় দিত। সে নিজেকে কখনো সবুজ আলম কখনো মেজর বসির পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর