শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী দুই ভাই গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী দুই ভাইকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন- আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডল ও জাছিজার রহমান ওরফে খোকা। র‌্যাবের পৃথক অভিযানে ওয়াহেদকে রাজধানীর উত্তর মান্ডা থেকে র‌্যাব-৩ এবং খোকাকে মোহাম্মদপুর থেকে র‌্যাব-২ এর একটি দল গ্রেফতার করে। র‌্যাব জানায়, তারা ২০১৬ সাল থেকে আত্মগোপনে ছিলেন। অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম দিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। এ ছাড়া ছদ্মনাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন তাবলিগ জামাতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে নিয়মিত স্থান পরিবর্তন করতেন। র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। ১৯৭১ সালে গঠিত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী আবদুল ওয়াহেদ জামায়াতে ইসলামীর গাইবান্ধা সদরের সদস্য সচিব ছিলেন।

গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১ জুন সকালে আসামি আবদুল ওয়াহেদ, তার পিতা আবদুল জব্বার মণ্ডল, তার ভাই জাছিজার রহমান মণ্ডল, মোন্তাজ, রঞ্জু মিয়াসহ হানাদার ও রাজাকারের সমন্বয়ে ২০-২৫ জনের একটি দল গাইবান্ধা সদরের বিষ্ণুপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালান। অম্বিকাচরণ সরকার এবং আবদুর রউফের পাশাপাশি বাড়িতে আবদুল জব্বার মণ্ডল পূর্বশত্রুতার জেরে দুই ছেলে ওয়াহেদ, জাছিজারসহ রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে হামলা চালিয়ে লুটপাট চালান। একপর্যায়ে ওয়াহেদ এবং তার বাবা জব্বার মিলে অম্বিকাচরণকে ধরে বেধড়ক মারপিট করেন। আঘাতের ফলে অম্বিকাচরণ মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে থাকলে তারা তাকে মৃত মনে করে ফেলে রেখে লুটপাটের মালামাল নিয়ে চলে যান। পরে রাজাকার ও পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে আবদুল ওয়াহেদ তার ভাই জাছিজারসহ আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়ে একই গ্রামের দিজেশচন্দ্র সরকারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট চালান।

এ ছাড়া ফুলকুমারী রানী এবং তার ননদ সন্ধ্যা রানী সরকারকে পাশবিক নির্যাতন করে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করান। সে ঘটনায় গৃহকর্তা দিজেশচন্দ্র সরকার বাধা দিতে গেলে তাকে তারা গাইবান্ধা আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেন এবং তার লাশ গুম করে দেন। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় ৪৫ থেকে ৫০টি হিন্দু বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, অপহরণসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে পরিবারগুলোকে দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ ছিল।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর