রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিটি নির্বাচন নিয়ে সরগরম সিলেট

মাঠে বিভিন্ন দলের একডজন মনোনয়নপ্রত্যাশী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এখনো প্রায় ছয় মাস বাকি। এর মধ্যেই মেয়র পদে মনোনয়ন নিয়ে শুরু হয়ে গেছে দৌড়ঝাঁপ। রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগের মাধ্যমে বাড়ানোর চেষ্টা করছেন জনসম্পৃক্ততা। অন্যদিকে, দলীয় মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে চালাচ্ছেন লবিং। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অন্তত একডজন নেতার বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে নগর সয়লাব। নিজেদের সমর্থকদের দিয়েও তারা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। ফলে তফশিলের আগেই সিলেট নগরজুড়ে বাজতে শুরু করেছে নির্বাচনী ঢাকঢোল।

এখন পর্যন্ত মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তারা হলেন- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ টি এম হাসান জেবুল ও আজাদুর রহমান আজাদ, জেলা সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগরের সদস্য প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান এবং বাফুফের কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সরব রয়েছেন মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী নেতা মাহবুবুর রহমান। সিলেট জাতীয় পার্টি সভা করে বাবুলকে দলীয় মনোনয়ন দিতে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছে। আর নির্বাচন নিয়ে দোলাচলে রয়েছে বিএনপি। তবে বিএনপি নির্বাচনে গেলে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীই হবেন মেয়র প্রার্থী- এমনটা মনে করছেন নগরবাসী।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি তৎপর মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। প্রায় একমাস ধরে গুঞ্জন চলছে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে কেন্দ্র থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এই গুঞ্জনের মধ্যে ২২ জানুয়ারি দেশে ফেরেন আনোয়ার। এরপর থেকে তিনি নগরীতে মেয়র পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রচারণা শুরু করেন। রাতদিন তিনি নগরীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন। দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশেই সিসিকের মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য মাঠে নেমেছেন বলে দাবি আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘দলের হাইকমান্ডের নির্দেশেই আমি কাজ করছি।’ আনোয়ারুজ্জামান ‘গ্রিন সিগন্যাল’র কথা বললেও মাঠ ছাড়ছেন না মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্য নেতারা। তারা বলছেন, নিয়মানুযায়ী স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের মাধ্যমেই প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। এভাবে আগেভাগে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের নজির নেই আওয়ামী লীগে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চারবারের সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, গত নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দল বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের ওপর আস্থা রাখায় তার পক্ষে কাজ করেছি। অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, গতবার মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়েছিলাম, এবারও চাইব। আওয়ামী লীগ করতে গিয়ে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছি। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী আসাদ উদ্দিন আহমদ নিজের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করে বলেন, মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য প্রায় আট বছর ধরে কাজ করছি। এই সময়ের মধ্যে নগরবাসীও আমাকে আপন করে নিয়েছেন। মিসবাহ উদ্দীন সিরাজ বলেন, ‘শেখ হাসিনাই আমাকে সিলেটে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইব।’

মাহি উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘সিলেটের মানুষ আমাকে আপনজন মনে করেন। মানুষের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে এবারও আমি নৌকার টিকিট চাইব।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বিএনপি রাজপথে আন্দোলনরত। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি দলীয় সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর