রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ছিল ভয়াবহ চক্রান্ত : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ছিল ভয়াবহ চক্রান্ত : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ছিল একটা সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র। এদের উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর মনোবলকে ভেঙে দেওয়া। ২৫ ফেব্রুয়ারি অত্যন্ত দুঃখজনক ও কলঙ্কজনক একটি দিন। এ দিনে দেশের ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহ ভয়াবহ একটি চক্রান্ত, একটি ষড়যন্ত্র এ দেশের বিরুদ্ধে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এত সেনা কর্মকর্তাকে হারাতে হয়নি।’ গতকাল রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় নিহত সেনা কর্মকর্তাদের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ সময় মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) ফখরুল আজম, রিয়ার অ্যাডমিরাল মুস্তাফিজুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জহুরুল আলম, কর্নেল (অব.) ফয়সাল, কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ কামরুজ্জামান, মেজর (অব.) মো. হানিফ, মেজর (অব.) মিজানুর রহমান, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) কোহিনূর আলম নূর, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (অব.) হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবীর খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় প্রায় ৭ হাজার সৈনিককে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘দুটি বিষয়ে বিচার হয়েছে- একটি হলো বিদ্রোহ ও হত্যা, অপরটি বিস্ফোরক মামলা। বিদ্রোহ ও হত্যা মামলায় বেশকিছু মানুষের সাজা হয়েছে, কারও খালাসের রায় হয়েছে। আমি কিছুদিন আগে জেলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখেছি, ১৩-১৪ বছর ধরে অনেক বিডিআর সদস্য সেখানে অমানবিক জীবন-যাপন করছেন। এখন পর্যন্ত তাদের মামলার শুনানি শুরু হয়নি। তাদের পরিবার ও ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি আজকে দাবি করব, তাদের বিরুদ্ধে যে জুডিশিয়াল সমস্যাগুলো রয়েছে, তা দ্রুত শেষ করে একটা ব্যবস্থা করা উচিত, তাদের মুক্তি হওয়া উচিত। আমি দাবি করব, যাতে অতি দ্রুত বিচারকাজ শেষ করে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। শুনেছিলাম সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউ মুক্তি পাননি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। এ জন্য সমগ্র জাতির ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। যে গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছে, অসংখ্য মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন, সেই গণতন্ত্র আমরা ফিরে পেতে চাই।’

‘বিডিআর বিদ্রোহের দিন বেগম খালেদা জিয়ার গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা দায়িত্বহীন একটি কমেন্ট। এমন ভয়াবহ একটি ঘটনা, যেখানে সমগ্র জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে যার সম্পর্কে বলা হচ্ছে, তিনি দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য সারা জীবন কাজ করেছেন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিডিআর বিদ্রোহে হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনীর তদন্তের প্রকৃত চেহারা জনগণ দেখতে পায়নি। তদন্ত প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ হয়নি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে যেভাবে তদন্ত করা উচিত ছিল, সেটা হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এতজন সেনা কর্মকর্তাকে হারাইনি। এই হত্যাকান্ড হয়েছিল দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর