সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন

নতুন হিসাব-নিকাশ খুলনায়

মেয়র পদে নেই বিএনপি কাউন্সিলর পদে সরকারি দলের সমর্থন পেতে মরিয়া প্রার্থীরা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

চলতি বছরের মে-জুন মাসে খুলনা সিটি করপোরেশনের পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা। এর মধ্যে ‘মেয়র প্রার্থী’ হিসেবে বর্তমান সিটি মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেককে নিয়ে সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে সরকারি দলে। একই সঙ্গে ৩১টি ওয়ার্ড ও ১০টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে দলের সমর্থন পেতে চলছে আওয়ামী লীগ নেতাদের দৌড়ঝাঁপ। স্থানীয় এমপি, মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাসা-বাড়ি, অফিসে ধরনা দিচ্ছেন সমর্থনপ্রত্যাশীরা। এদিকে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৫ মে খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও এবার মেয়র পদে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপির নেতারা। তবে ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থন নিয়ে শুরু হয়েছে নানান হিসাব নিকাশ।

জানা যায়, সর্বশেষ সিটি নির্বাচনে বিজয়ী ১২ কাউন্সিলর ২০১৯ সালে ২৫ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এদের মধ্যে আটজন সাবেক ও বর্তমান বিএনপি নেতা, বাকি চারজন স্বতন্ত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, যারাই নৌকার পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করছে, তারাই নৌকায় যোগ দিচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া কাউন্সিলরদের বেইমান আখ্যা দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় বিএনপি। দল বদল করা কাউন্সিলররা এবার ভোটের মাঠে চাপের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এবার নির্বাচনেও তাদের মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সাবেক বিএনপি নেতা) সাইফুল ইসলাম, সংরক্ষিত ১ নম্বর আসনের মনিরা আক্তার, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সাবেক বিএনপি নেতা) এইচ এম ডালিম, ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইমাম হাসান চৌধুরী ময়না, ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সাবেক বিএনপি নেতা) মনিরুজ্জামান মনি, ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম মিঠু, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সাবেক বিএনপি নেতা) শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, ২০ নম্বর ওয়ার্ড (বিএনপি মনোনীত) কাউন্সিলর শেখ মো. গাউসুল আজম, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সাবেক যুবদল নেতা) আনিসুর রহমান বিশ্বাস, ৭ নম্বর ওয়ার্ড (বিএনপি মনোনীত) কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ পিন্টু, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড (স্বতন্ত্র) কাউন্সিলর মো. গোলাম মওলা শানু এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ড (বিএনপি মনোনীত) কাউন্সিলর শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তাদের প্রত্যেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন।

 

তবে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বলছেন, তাদের ভাবনায় এখন শুধু মেয়র প্রার্থী রয়েছে। খুলনা নগরীকে শতভাগ বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য তালুকদার আবদুল খালেকের মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী দিতে চায় দলের হাইকমান্ড। মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেছেন, নৌকায় ভোট চেয়ে ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে। ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটির পাশাপাশি ভোট কেন্দ্রভিত্তিক কমিটিও তৈরি করা হচ্ছে।

অপরদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, খুলনার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব, জলাবদ্ধতা, মাদক-মশক সমস্যা রয়েছে। ওয়ার্ডের নাগরিকরা নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত। কাউন্সিলর নির্বাচন মোটামুটি নিরপেক্ষ হলে বিএনপি প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হবে। সেক্ষেত্রে দলের পুরনো প্রার্থীরা মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকবে। যদিও মনোনয়ন নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষার কথা বলছেন বিএনপির নেতারা।

এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিটি মেয়র পদে সংগঠনের নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আবদুল আউয়ালের নাম ঘোষণা করেছে। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন দলের পুরনো প্রার্থী জেলা শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু। মধু জানান, নির্বাচনের পরিস্থিতি দেখে আনুষ্ঠানিক নাম ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু থাকলে তিনি নিজে প্রার্থী হবেন। অন্যথায় বিকল্প হিসেবে দলের অন্য কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর