বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরিচিতজনের মাধ্যমে রিক্রুট করে জঙ্গি সংগঠন হিন্দাল শারক্বীয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

নিকটাত্মীয় ও সহপাঠীদের মাধ্যমে নতুন সদস্য রিক্রুট করে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’। এরপর তাদের কথিত হিজরতের নামে চরাঞ্চলে নিয়ে তাত্ত্বিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পর তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় পাহাড়ে। মঙ্গলবার রাতে পটিয়ার বাইপাস এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার চার জঙ্গিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। তারা হলেন- হোসাইন আহমদ, নিহাল আবদুল্লাহ, আল আমিন এবং নওমুসলিম আল আমিন ওরফে পার্থ কুমার দাস।  র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুবুল আলম বলেন, গ্রেফতার হওয়া জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার চারজন মূলত নিকটাত্মীয় এবং সহপাঠীর মাধ্যমে জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়েছেন। এ জঙ্গি সংগঠন গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে নতুন সদস্য রিক্রুট করছে। জানা যায়, দেশে সক্রিয় অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলো ‘কাট আউট’ পদ্ধতিতে সংগঠনে রিক্রুট করে থাকে। তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন পন্থায় হাঁটছে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া। নতুন এ জঙ্গি সংগঠন সহপাঠী, নিকটাত্মীয়, স্থানীয় পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে টার্গেট ব্যক্তিকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করছে। পরিচিতজনরা টার্গেট ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশের মুসলিম নির্যাতনের ভিডিও এবং জিহাদিদের অপব্যাখ্যা দিয়ে সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট করে ও টোপ দেয়। প্রাথমিক ব্রেইন ওয়াশের পর তাদের কথিত হিজরত করানো হয়। এরপর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় পটুয়াখালী, ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন চরাঞ্চলে। সেখানে তাদের তাত্ত্বিক, মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় পার্বত্য এলাকায়। সেখানে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’র তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয় সামরিক প্রশিক্ষণ। ‘কেএনএফ’ মূলত জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, তার সঙ্গে বোমা তৈরি এবং প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার প্রশিক্ষণ দেয়। পার্বত্যাঞ্চলে কেএনএফ বিরোধী অভিযান শুরু হলে হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ তাদের আত্মগোপনের নির্দেশ দেন। আমিরের নির্দেশ পেয়ে তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পার্বত্য এলাকার সাইজামপাড়া, মুন্নুয়ামপাড়া, রোয়াংছড়ি, পাইক্ষংপাড়া, তেলাংপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করেন।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার হওয়া হোসাইন একজন মাদরাসা শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে তিনি নতুন জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করেন। তার একে-৪৭-সহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ রয়েছে। আল আমিনও একজন মাদরাসা শিক্ষার্থী। ২০২১ সালের আগস্টে তিনি কথিত হিজরত করেন। একই বছরের নভেম্বরে থেকে তিনি সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু করেন। গ্রেফতার হওয়া আল আমিন একজন নওমুসলিম। ২০১৮ সালে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ২০২১ সালে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি কেএনএফের কাছ থেকে সব ধরনের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। গ্রেফতার হওয়া নিহাল আবদুল্লাহ ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট কথিত হিজরত করেন। তিনি কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া ৮ তরুণের একজন।

সর্বশেষ খবর