রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফের টার্গেট কিলিং, অস্থিরতা বাড়ছে খুলনায়

ধরা পড়ছে না ভাড়াটে খুনিরা নেপথ্যে হত্যার প্রতিশোধ, চরমপন্থি কানেকশন, কিশোর গ্যাং

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় হঠাৎ করেই ‘টার্গেট কিলিং’ বেড়েছে। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে টার্গেট করে নির্বিঘ্নে হত্যাকান্ড ঘটিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে খুনিরা। হত্যাকান্ডের নেপথ্যে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব, চরমপন্থি কানেকশন, হত্যার প্রতিশোধ, নির্বাচনী বিরোধ, কিশোর গ্যাং তদন্তে সামনে এসেছে। এরই মধ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নেমেছে পুলিশ। জানা যায়, ২০২২ সালের ৭ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত খুলনায় ১০টি টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব ঘটনায় নিহত ১০ জনের মধ্যে তিনজনই ছিলেন হত্যা মামলার আসামি। বাকি দুইজন নির্বাচনী বিরোধে, একজন চরমপন্থি কানেকশনে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে একজন ও তিনজন কিশোর গ্যাংয়ের হাতে নিহত হন। খুলনার খানজাহান আলী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন খান বলেন, ২৪ মার্চ শিরোমণি এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা আনছার উদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওঁৎ পেতে থাকা তিন যুবক প্রকাশ্যে গুলি করেই মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। নিহত আনছার উদ্দিন দিঘলিয়া বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। এর আগে ৩০ জানুয়ারি খেয়াঘাটের ইজারাসংক্রান্ত দ্বন্দ্বে ফুলতলার জামিরা রোডে ব্যবসায়ী মিলন ফকিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একটি মোটরসাইকেলে দুইজন ঘটনাস্থলে এসেই মিলন ফকিরকে লক্ষ্য করে গুলি করে। দৌড়ে তিনি একটি দোকানে ঢুকলে পেছন থেকে তার মাথায় গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। একইভাবে ২০২২ সালের ২৯ জুন রাতে মুজগুন্নী এলাকায় জুলকার নাঈম মুন্না ওরফে মারজানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি সেনহাটি ইউপি চেয়ারম্যান হালিম গাজী হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিলেন। ওই বছরের ৭ মার্চ নগরীর হামিদনগর এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন হত্যা মামলার আসামি রাজু শেখকেও গুলি করে হত্যা করা হয়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (নর্থ) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই খানজাহান আলী থানা, দিঘলিয়া উপজেলা ও ফুলতলার এ এলাকায় ভাড়াটে কিলিং প্রবণতা রয়েছে। পার্শ্ববর্তী এলাকার কয়েকটি ঘটনার জেরে শহরের মধ্যেও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ১১ মার্চ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে যা চলবে ২৭ মার্চ পর্যন্ত। হত্যাকান্ডের পর সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। খুনিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এদিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম জানান, বিচার বিলম্বিত হওয়ার সংস্কৃতি থেকে আক্রোশ তৈরি হয়। ফলে প্রতিশোধপরায়ণ প্রবণতা থেকেই টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা ঘটছে। জানা যায়, চরমপন্থি কানেকশনে ২০২২ সালের ১২ মে ফুলতলায় বণিক কল্যাণ সোসাইটির নেতা রকিবুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়া নির্বাচনী বিরোধে ২০২২ সালে ২ আগস্ট সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন দিঘলিয়ার বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন।

এ ছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা চানমারি খ্রিস্টানপাড়ায় মো. পলাশ ও ফুলতলায় এমএম কলেজ প্রাঙ্গণে কলেজছাত্র আলিফ হোসেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। পুলিশ জানায়, কয়েকটি ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ঘটনায় তদন্ত ও আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর