শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

জবিতে গুচ্ছের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

সমন্বিত গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একাডেমিক সভা চলাকালীন গুচ্ছের পক্ষ-বিপক্ষের অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপাচার্যের সভাকক্ষে থাকা ওই সময়ের সিসি টিভি ফুটেজ সরিয়ে ফেলারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার উপাচার্যের সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল সভায় ওই শিক্ষককে মারধরের এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল কাদের। একাডেমিক কাউন্সিলের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, আগে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি এবারই প্রথম দেখলাম। সভায় ওই শিক্ষক গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকার পক্ষে মতামত দেয় এবং গুচ্ছে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ভর্তি কমিটি গঠন করা হবে কেন প্রশ্ন তোলেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে তার বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গুচ্ছের পক্ষে থাকা কয়েকজন শিক্ষক জোড়াজুড়ি করে বসাতে গেলে হাতাহাতি এবং তাকে মারধর করে জোরপূর্বক বসিয়ে দেয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ তাদের শান্ত করতে গিয়েও ব্যর্থ হন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, এমন ঘটনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

একাডেমিক সভায় আমি একটু ভিন্ন মত দিয়েছি বলেই এত সংখ্যক শিক্ষকের সামনে আমার গায়ে হাত তুলবে এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমি এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাব। প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ পর্যন্ত আইনি লড়াই করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সভায় উপস্থিত জবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরে আলম আবদুল্লাহ বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি নই। তবে যা হয়েছে এবং ঘটেছে সবার চোখের সামনে হয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একে এম লুৎফর রহমান বলেন, ‘এখানে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি খুব উত্তেজিত ছিলেন। বসতে বলার পরও বসতে চাচ্ছিল না। কয়েকজন তার ঘাড়ে চাপ দিয়ে বসিয়ে দিয়েছি। বিষয়টা মিটমাট করা হয়েছে। আমরাও দুঃখ প্রকাশ করেছি, সেও দুঃখ প্রকাশ করেছে।’

এ বিষয়ে আরেক অভিযুক্ত শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সদস্য সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিল কোনো সংসদ কিংবা টকশোর টেবিল নয়। একজন শিক্ষক হয়ে তিনি টেবিল চাপড়িয়ে কথা বলতে পারেন না। পরবর্তীতে আমরা কয়েকজন গিয়ে তাকে বসিয়ে দিয়েছি শুধুই।’

তবে এ ঘটনায় জড়িত একাধিক শিক্ষকের নাম এলেও তাদের সঙ্গে কথা বলতে মুঠোফোনে এশাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও অনেকে কথা বলতে রাজি হননি।

সিসি টিভি ফুটেজ গায়েব হওয়ার বিষয়ে আইটি দফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সিসিটিভির ফুটেজ পাইনি। হয়তো কোনো টেকনিক্যাল ত্রুটির জন্য ফুটেজটি পাওয়া যাচ্ছে না।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, যাই ঘটেছে তা শিক্ষকদের কাছ থেকে কখনোই কাম্য নয় এবং শিক্ষকসুলভ আচরণও নয়। এই সভায় একজন সদস্য হিসেবে পক্ষে-বিপক্ষে সবার কথা বলার অধিকার আছে। একাডেমিক সভায় আমাদের সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটবে তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর