শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঈদে চট্টগ্রাম ছাড়ছে ৩০ লাখ মানুষ

মহাসড়কের পাশে হাজারো নিম্ন আয়ের মানুষ

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

ঈদে চট্টগ্রাম ছাড়ছে ৩০ লাখ মানুষ

ঈদ কেনাকাটা প্রায় শেষ। এবার বাড়ি ফেরার পালা। চলছে প্রস্তুতি। কেউ ট্রেনের টিকিট নিয়েছেন, কেউ বাসের। কেউ আবার নিজের গাড়ি কিংবা ভাড়া করা গাড়িতে যাবেন বাড়ি। যেভাবেই হোক, ঈদ এলে জন্মভিটায় ফেরাটাই যেন ভীষণ আনন্দের ব্যাপার। পূর্ববর্তী বছরগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের ঈদে অন্তত ৩০ লাখ মানুষ ঈদ উৎসব পালনে গ্রামের বাড়ি ফিরে যাবেন। চট্টগ্রাম নগরীর ৭০ লাখ বাসিন্দাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি চট্টগ্রামের বাইরের বিভিন্ন জেলা ও পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোর বাসিন্দা। যারা উৎসব এলে শেকড়ের টানে জন্মভিটায় ফিরে যান। এদের মধ্যে যারা উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গসহ দূরবর্তী জেলাগুলোর বাসিন্দা তারা দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও আকাশপথে বাড়ি যাবেন। চট্টগ্রাম জেলা ও উপজেলাগুলোর বাসিন্দারা স্থানীয় যানবাহন ও ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়ে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে সীতাকু  পর্যন্ত বিভিন্ন শিল্পকারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করা নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে বাড়ি যেতে বাড়তি ঝামেলায় পড়তে হয়। রেলওয়ের কর্মকর্তা, বাসমালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, প্রতি বছর ঈদ এলে চট্টগ্রাম থেকে সড়ক, আকাশ ও নৌপথে ২৫-৩০ লাখ মানুষ চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়। এটা একটা আনুমানিক ধারণা। তবে এই সংখ্যা কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। খুব বেশি তফাৎ হওয়ার সুযোগ নেই। এবারও একই পরিমাণ মানুষ চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, ঈদযাত্রাকে ঝামেলামুক্ত করতে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের পক্ষ থেকে এবার ঈদযাত্রার জন্য ১০টি আন্তনগর ও মেইল ট্রেন, সাতটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন প্রতিদিন যাতায়াত করবে। ট্রেনগুলোতে ঈদ উপলক্ষে প্রয়োজন মতো বাড়তি বগি সংযোজন করা হচ্ছে। গত সোমবার থেকে রেলপথে অনেকেই বাড়ি যাওয়া শুরু করেছেন। এদিকে আন্তজেলা বাসমালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ জানান, ঈদ উপলক্ষে গত রবিবার থেকে চট্টগামের কদমতলী, অলংকার, বড়পুল, ফ্রিপোর্ট পয়েন্ট থেকে প্রতিদিন ৭০০ গাড়ি উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের দিকে ছেড়ে যাচ্ছে। এসব গাড়িতে ৪০-৪৫ জন করে যাত্রী বাড়ি যাচ্ছেন। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত এসব গাড়ি আসা-যাওয়া করবে। এদিকে গত বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর কদমতলী বাসস্ট্যান্ড, দামপাড়া বাসস্ট্যান্ড ঘুরে বাড়িমুখী মানুষের ভীষণ ব্যস্ততা দেখা গেছে। অনেকেই দুর্ভোগ এড়াতে আগেভাগে বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

তবে অনেকে আবার ঈদের ঠিক আগের দিনের টিকিট নিতেও কাউন্টারগুলোতে ভিড় করছেন। কেউ কেউ নিজের জেলার রুটের বাসের টিকিট না পেয়ে বিকল্প রুটের টিকিট নিচ্ছেন।

রাজশাহীর বাসিন্দা এনায়েত উল্লাহ জানান, গ্রামীণ পরিবহন সরাসরি চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী যায়। কিন্তু তিনি সেখানে পছন্দমতো টিকিট পাননি। এ কারণে ঢাকার টিকিট কেটেছেন। গাবতলী থেকে অন্য পরিবহনে তিনি রাজশাহী যাবেন। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গরমের কারণে এসি বাসগুলোতে ভিড় কিছুটা বেশি। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে এসি বাসের বিকল্প নেই। তবে যাদের বাজেট কম কিংবা সামর্থ্য নেই তাদের বাধ্য হয়ে নন এসি বাসে বাড়ি ফিরবেন। চট্টগ্রামের কাছাকাছি জেলাগুলোতে যাদের বাড়ি, তাদের অনেকে বিভিন্ন লোকাল বাসে চড়েও বাড়ি যাবেন। তবে ঈদ উপলক্ষে কোনো কোনো পরিবহন স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন একাধিক যাত্রী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর