রবিবার, ৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
নেতৃত্বে সালেহ বাহিনী

অপহরণ মাদকে রোহিঙ্গারা

কক্সবাজার প্রতিনিধি

অপহরণ মাদকে রোহিঙ্গারা

কক্সবাজারের টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে রোহিঙ্গা হাফিজুর রহমান ওরফে সালেহ ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। এই সালেহর সন্ত্রাসী দলে সদস্যসংখ্যা ১৫ জন। সালেহর নেতৃত্বে সন্ত্রাসী দলটি টেকনাফের শালবাগান পাহাড়, জুম্মাপাড়া ও নেচারি পার্ক এলাকা, বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীপাড়া পাহাড়, বড় ডেইল পাহাড়, কচ্ছপিয়া পাহাড়, জাহাজপুরা পাহাড়, হলবনিয়া পাহাড়, শিলখালী পাহাড় এলাকায় অবস্থান করে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করত। অটোরিকশার চালক এবং সিএনজি চালক হিসেবে ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন কৌশলে কক্সবাজারের হ্নীলা, হোয়াইক্যং, উনচিপ্রাং, শ্যামলাপুর, জাদিমোড়া ও টেকনাফ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের টার্গেট করে অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায় ও ডাকাতি করে আসছিল তারা।

এই সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হাফিজুর রহমান ওরফে সালেহ উদ্দিন ও তার অন্যতম সহযোগী সোহেল ডাকাতসহ ছয়জনকে গ্রেফতারের পর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল কক্সবাজারে র‌্যাব-১৫ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পাহাড়ে গোলাগুলির পর ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেশে তৈরি তিনটি একনলা বড় বন্দুক, দুটি একনলা মাঝারি বন্দুক, ছয়টি একনলা ছোট বন্দুক, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, চার রাউন্ড খালি কার্তুজ, দুটি ছুরি ও ছয়টি দেশে তৈরি দা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- বাহিনীর প্রধান হাফিজুর রহমান ওরফে ছালেহ উদ্দিন ডাকাত, তার সহযোগী নুরুল আলম নুরু, আক্তার কামাল সোহেল, নুরুল আলম লালু, হারুনুর রশিদ ও রিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি। এরা সবাই বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিঙ্গা।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সালেহর নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী দলটি অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায় ও ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যমতে, ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া এলাকার ১০ জন কৃষক, ২ জানুয়ারি রোহিঙ্গা শরণার্থী রেজুয়ানা, ২৬ মার্চ ন্যাচারাল পার্কের দর্শনার্থী হ্নীলার দদমিয়ার বাসিন্দা কবির আহাম্মদের ছেলে রিদুয়ান সবুজ ও একই এলাকার বাসিন্দা মাওলানা আবুল কালামের ছেলে নুরুল মোস্তফা, ১৫ এপ্রিল ফুলের ডেইল এলাকা থেকে বাবুল মেম্বারের ছেলে ফয়সাল, ৩০ এপ্রিল রোহিঙ্গা হামিদুল্লাহ এবং ৩ মে রোহিঙ্গা আবুল কালামসহ বহু ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন তারা। এর বাইরেও অর্ধশতাধিক অপহরণে এ গ্রুপের জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ছালেহ উদ্দিন ২০১২ সালে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসেন। পরে ২০১৩ সালে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যান। ওই সময় তিনি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজশে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। পরে ২০১৯ সালে তিনি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম জানান, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান সালে উদ্দিনের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণসহ ছয়টির বেশি মামলা রয়েছে। র‌্যাব মামলা দায়ের করে থানায় সোপর্দ করার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর