মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিশু অপহরণ, ধর্ষণ ও পতিতালয়ে বিক্রির দায়ে দুজনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের বদরগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও পতিতালয়ে বিক্রির মামলায় প্রায় আট বছর পর দুজনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে আট বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালতের বিচারক। গতকাল রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ইয়াছমিন, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লালচাঁদপুর গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে আবদুল ওহিদ ও বদরগঞ্জ উপজেলার চান্দেরডাঙ্গা গ্রামের এন্তাজুল হকের মেয়ে তারা মণি। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততা না থাকায় অন্য আসামি মানিক মিয়াকে খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আদালতে ইয়াছমিন, তারা মণি ও মানিক মিয়া উপস্থিত থাকলেও ওহিদ পলাতক রয়েছেন। মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর বদরগঞ্জ উপজেলার ওসমানপুরের ওই শিক্ষার্থী সকালে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। সে স্কুল ছুটির পর বাড়ি না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। ওই ছাত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বাবা বদরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই মধ্যে স্থানীয় ভ্যানচালক আল আমিনের মাধ্যমে জানতে পারেন প্রতিবেশী এন্তাজুলের মেয়ে তারা মণির সঙ্গে তার মেয়ে বদরগঞ্জের আউলিয়াগঞ্জ গেছে।

 বিষয়টি পুলিশকে জানালে বদরগঞ্জ থানা পুলিশ নিখোঁজ ওই ছাত্রীকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে এবং কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কমল মোহন চাকী ২০১৬ সালের ১০ মার্চ আদালতে চার্জশিট দেন। ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে গতকাল আদালতের বিচারক আসামি ইয়াছমিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড, ধর্ষণের ঘটনায় আবদুল ওহিদকে দুটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং তারা মণি শিশু হওয়ায় তাকে আট বছরের আটকাদেশ দেন।

রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি জাহাঙ্গীর আলম তুহিন বলেন, স্কুলের বান্ধবী তারা মণি ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে ওহিদের কাছে তুলে দেয়। ওহিদ ওই ছাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে রেলস্টেশন এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ধর্ষণ করে এবং মামলার আসামি ইয়াছমিনের কাছে বিক্রি করে দেয়। ইয়াসমিন ওই ছাত্রীকে কিশোরগঞ্জ ভৈরব এলাকার একটি পতিতালয়ে থাকতে বাধ্য করে। এর কিছুদিন পর ইয়াছমিন ছাত্রীটিকে অন্য জায়গায় বিক্রির চেষ্টা করলে কৌশলে সে পালিয়ে যায়। বাসযাত্রী এক নারীকে ওই ছাত্রী পুরো বিষয়টি খুলে বলে। পরে ওই নারী পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়। তিনি বলেন, আমরা রায়ে সন্তুষ্ট হলেও মামলার আসামি মানিককে অব্যাহতি দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর