বুধবার, ১০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

উৎপাদনে ভাটা চট্টগ্রাম ওয়াসায়

রেশনিং পদ্ধতিতেও মিটছে না চাহিদা, তীব্র খরতাপে দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

উৎপাদনে ভাটা চট্টগ্রাম ওয়াসায়

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির দৈনিক উৎপাদন কমছে প্রায় ৯ কোটি লিটার। রেশনিং পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করলেও মিটছে না চাহিদা। তীব্র খরতাপে নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। অন্যদিকে পানির সংকটকে পুঁজি করে দাম বাড়ানো হয়েছে মিনারেল ওয়াটারের।

জানা যায়, গত প্রায় দুই মাস ধরে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির অন্যতম উৎস কাপ্তাই লেকে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। হালদা নদীর পানিতে দেখা দেয় স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ছয় গুণ বেশি লবণাক্ততা। এপ্রিলের শুরুতে কর্ণফুলী নদীতে কাপ্তাই লেক থেকে ভেসে আসে শেওলা। এসব কারণে ওয়াসার পানির দৈনিক উৎপাদন কমছে প্রায় ৯ কোটি লিটার। কোথাও পানি লবণাক্ত, কোথাও একবারেই নেই, কোথাও মাঝে মাঝে মিলে পানি। গত দুই মাস ধরে নিয়মিত পানি পাচ্ছে না নগরবাসী। ওয়াসা রেশনিং পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করলেও তাতে চাহিদা মিটছে না। অন্যদিকে পানির সংকটকে পুঁজি করে দাম বাড়ানো হয়েছে মিনারেল ওয়াটারের।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ওয়াসার অবহেলার কারণে নগরবাসীকে পানির জন্য অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে। গ্রীষ্ম মৌসুমে পানি শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এই মৌসুমকে কেন্দ্র করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত ছিল। কিন্তু ওয়াসা বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। ফলে এখন নগরবাসীকে ডাবল টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, এখন চলছে তীব্র গরমের মৌসুম। এ মৌসুমে পানির সংকট থাকে। বলা যায়, এটি একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। তবে এ সমস্যা উত্তরণে ভাটার সময় পানি উত্তোলন করে পরিশোধন করা হচ্ছে। এ কারণে এখন ওয়াসার প্রতিদিন ৯ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদন হচ্ছে। বৃষ্টি হলে এ সমস্যা কেটে যাবে।

এদিকে ওয়াসার পানির লবণাক্ততার সংকটকে পুঁজি করে দাম বাড়ানো হয়েছে ড্রিংকিং ওয়াটারের। প্রায় ২০ লিটারের একটি জারের দাম আগে ছিল ৪০ টাকা, এখন নেওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। নগরে ৪৭টি পানি বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক ২৫ হাজার জার সরবরাহ করত। ওয়াসার পানির সংকটের পর থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রায় ৫৫ হাজার জার।

চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নগরে দৈনিক পানির চাহিদা ৫৫ কোটি লিটার। ওয়াসা চারটি পানি শোধনাগার থেকে দৈনিক ৪৬ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার ইউনিট-১ ও ইউনিট-২ থেকে দৈনিক ২৮ কোটি লিটার পানি। মদুনাঘাট পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি লিটার এবং মোহরা পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি লিটার। কিন্তু এখন দৈনিক ৯ কোটি লিটার কম উৎপাদন করছে। বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি। ৭৭০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে ওয়াসা পানি সরবরাহ করে। তবে অধিকাংশ লাইনই পুরনো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর