রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

সমরেশ জনপ্রিয়, তাঁর লেখায় ছিল গাম্ভীর্য

স্মরণসভায় নঈম নিজাম

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সমরেশ জনপ্রিয়, তাঁর লেখায় ছিল গাম্ভীর্য

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গতকাল সদ্য প্রয়াত জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদারের স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জনপ্রিয় ধারার লেখক হলেও সমরেশ মজুমদারের লেখার মধ্যে গাম্ভীর্য ছিল। আর দশজন জনপ্রিয় ধারার লেখক থেকে তিনি ব্যতিক্রম ছিলেন। সেই ব্যতিক্রমটুকুই তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন সাহিত্যে। সদ্য প্রয়াত জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদারের স্মরণসভায় এসব কথা বলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘আবিষ্কার পাবলিকেশন’ এ স্মরণসভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, প্রকাশক অশোক রায় নন্দী, কবি ফারুক মাহমুদ, কবি ফরিদ আহমেদ দুলাল, সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি, কবি সালেম সুলেরী, কবি শামীমা চৌধুরী প্রমুখ। এ সময় কলকাতা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সমরেশ মজুমদারের মেয়ে দোয়েল মজুমদার। নঈম নিজাম বলেন, ‘সমরেশ মজুমদারের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কটা নিউইয়র্কের হাডসন নদীর তীর থেকে মেঘনা নদীর মাঝ পর্যন্ত। একসঙ্গে আড্ডা, একসঙ্গে পথচলা। ঈদের দুই দিন আগে তিনি যখন হাসপাতালে গেলেন, এর দুই দিন আগে আমাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ২ মে বাংলাদেশে আসবেন। আমি দেশের বাইরে যাব জানিয়ে তাকে পরে আসতে অনুরোধ করলাম। ঈদের পর অফিসে গেলাম। সহকর্মী রাসেল জানাল, সমরেশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে ২ তারিখে নয়, তিনি ৮ মে বাংলাদেশে আসবেন। হাসপাতালে গিয়েও বাংলাদেশে আসার আকুতিটা তাঁর একই রকম ছিল। তাঁর মেয়ে জানাচ্ছিলেন, তিনি সুস্থ হচ্ছেন। হঠাৎ করেই তিনি চলে গেলেন।’ নঈম নিজাম বলেন, সমরেশ মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনে নিয়মিত লিখতেন। ঈদসংখ্যায় লিখতেন। মজার ব্যাপার হলো, তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশের অন্য কোনো পত্রিকায় লিখতেন না। বলতেন, ‘নঈমের সাথে আমার সম্পর্ক ব্যক্তিগত। একটি লিখলে ওকেই পাঠাব।’ তিনি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে মিশে যেতেন। তিনি আমাকে একটি বই উৎসর্গ করেছিলেন, নাম ‘প্রবেশ’। আমি বিস্মিত হয়েছিলাম। তাঁর মৃত্যুতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম, বাংলাদেশ প্রতিদিন ক্ষতিগ্রস্ত হলো, আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘সমরেশ মজুমদারের বই পড়তে পড়তেই আমরা বড় হয়েছি। দীপাবলির মতো নিজেকে তৈরি করতে শিখেছি- জীবনযুদ্ধে কীভাবে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হয়, জিততে হয়। আমি ওই সময় থেকেই সেগুলো আয়ত্ত করেছি।’ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘কোনো লেখক জনপ্রিয় হওয়ার জন্য লেখেন না। লেখক তো তাঁর লেখকসত্তা থেকেই সৃষ্টি। সমরেশ মজুমদারের মতো লেখকদের লেখার যে বৈশিষ্ট্য, সেটিই তাঁদের শক্তি। এটি দ্বিতীয় কারোর মধ্যে আর নেই।’ কবি ফারুক মাহমুদ বলেন, ‘সমরেশ মজুমদার অনেক জনপ্রিয় লেখক- এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। জনপ্রিয় লেখকের সঙ্গে সিরিয়াস ধারার লেখকের কোনো বিরোধ আছে বলে আমি মনে করি না। সমরেশ মজুমদার দুটোকে মেলাতে পেরেছিলেন। এটা কিন্তু একজন বড় লেখকের গুণ।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর