শিরোনাম
সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বছরে বন্ধ ১৮০ দিন

গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের দাবি

রাকিব হোসেন, ইবি

বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৮০ দিনই বন্ধ থাকছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। বাকি ১৮৫ দিন চলে দেশের প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। ফলে করোনাকালীন সেশনজট কাটিয়ে উঠতে পারছে না ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠটি। সেশনজটের অভিশাপ নিয়ে বছরের অর্ধেক দিনের মতো বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া সেশনজট কমাতে ইবির গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে শাখা ছাত্র মৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, এ ১৮০ দিনের মধ্যে শুক্র ও শনিবারের মোট সাপ্তাহিক ছুটি ১০৫ দিন। এ ছাড়া ঈদুল ফিতর, আজহা, দুর্গাপূজা, গ্রীষ্ম ও শীতকালীনসহ অন্যান্য ছুটি মিলে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকবে ৭৫ দিন। উপাচার্যের হাতে সংরক্ষণ আছে তিন দিনের ছুটি। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইবির সব বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হয়েছে। এ নিয়মে প্রতি বিভাগকে বছরে দুটি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। দীর্ঘ ছুটি থাকার কারণে অনেক বিভাগের শিক্ষকরা ক্লাস শেষ না করেই পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, ইংরেজি, আল ফিতহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ, ইইই, পরিসংখ্যান বিভাগ, ইইই, গণিতসহ কয়েকটি বিভাগে সেশনজট সৃষ্টি হয়েছে। এ বিভাগগুলো সেশনজট কাটানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষকরা কমপক্ষে সাড়ে তিন মাস ক্লাস নেবেন। তাহলে দুই সেমিস্টার মিলে ক্লাস নিতে হবে সাত মাস। আর ক্লাস শেষের ১৫ দিন পর পরীক্ষা হবে। এক সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ করতে কমপক্ষে সময় লাগে এক মাস। সে হিসাবে কোর্স ও পরীক্ষায় সময় লাগার কথা নয় মাস, অর্থাৎ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার জন্য ২৭০ দিনের প্রয়োজন। কিন্তু ক্যালেন্ডার হিসাবে ১৮০ দিনে তাদের ক্লাস ও পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করতে পারছে না বিভাগগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তারা ছুটি নিয়েছেন। হঠাৎ পরিবর্তন করতে গেলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে। এটা আগামী বছর থেকে সমাধান হবে। আর বিভাগগুলো চাইলেই সেশনজট কমিয়ে আনতে পারে।’

এদিকে সেশনজট কমাতে ইবির গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র মৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গ্রীষ্মকালীন ছুটি আগামী ৩ জুন শুরু হয়ে ১২ জুন পর্যন্ত শেষ হবে। ২৪ জুন ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যে সাত দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চলবে। গতকাল সংগঠন দুটির  সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত পৃথক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে ছাত্র মৈত্রীর নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনাকালীন প্রায় দেড় বছরের ছুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ফলে সেশনজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। তাই সেশনজট পুষিয়ে উঠতে ধারাবাহিক ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া এবং ছুটি কমানোর বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করে ক্লাস ও পরীক্ষা অব্যাহত রাখার দাবি জানান তারা।

ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বলেন, তীব্র সেশনজটে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের বিকল্প নেই। ছুটি বাতিল করে সেশনজট কমিয়ে আনা সম্ভব। গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রাখার দাবি জানান তারা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর