সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভ্যাপসা গরমে কাহিল জীবন

জরুরি কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

গ্রীষ্মের শেষ ভাগে এসে প্রচন্ড রোদ ও দাবদাহে ভ্যাপসা হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম এবং এর আশপাশের এলাকা। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ঘেমে যাচ্ছে মানুষ। সন্ধ্যার পর রোদের উত্তাপ না থাকলেও শুরু হয় লোডশেডিং। ফলে রাতেও শান্তি নেই। রাতভর দফায় দফায় লোডশেডিংয়ে কাহিল হয়ে উঠেছে জনজীবন। এই হাঁসফাঁস অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানান, কোনো এলাকার তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হলে দাবদাহ শুরু হয়। আরও দুই ডিগ্রি বাড়লে অর্থাৎ ৩৮ পার হলে মাঝারি আকারের দাবদাহ শুরু হয়। আর ৪০ পার হলে সেটা তীব্র দাবদাহ। রবিবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগেরদিন শনিবার ৪০.৩ ডিগ্রি পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, এই তাপমাত্রার সঙ্গে চট্টগ্রামে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে আরও কয়েকদিন এই অবস্থা বিরাজ করবে বলে জানান তিনি। এদিকে এই দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ফলে রিকশা ও সিএনজি ট্যাক্সিচালকদের আয় কমে গেছে। গতকাল দুপুরে সরেজমিনে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি মোড় ও সিআরবিতে গিয়ে বেশ কয়েকজন রিকশা চালককে বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। এ সময় আইসক্রিম খেয়ে কয়েকজনকে শীতল হতে দেখা যায়। আলাপকালে তারা জানান, সকালে ও সন্ধ্যায় কিছুটা যাত্রীর চাপ থাকে। আর সারাদিন শহরে মানুষের আনাগোনা কমে গেছে। এ কারণে তাদের আয়ও কমে গেছে। চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী এম রেজাউল করিম জানান, চট্টগ্রামে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু এখন পিক আওয়ারে ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে একদিকে কিছু সময় বন্ধ করে অন্যদিকে দিতে হচ্ছে। এভাবে পালাক্রমে সব এলাকায় লোডশেডিং দেখা দিচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগে ২ নম্বর গেট সাবস্টেশনে কর্মরত মীর সাইফুদ্দিন নামের এক কর্মকর্তা জানান, তারা সারাদিন সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে জরুরি সেবার কল পাচ্ছেন। অনেকে জরুরি সেবা নম্বরে ফোন করে অভিযোগ দিচ্ছেন। সেখান থেকে তাদের কাছে লোডশেডিংয়ের সমাধান চাওয়া হচ্ছে। তারা সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন সবদিকে সমন্বয় করে লোডশেডিং করতে। চট্টগ্রামের মোমেনবাগের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন জানান, দিনভর দফায় দফায় লোডশেডিং আছে। এর সঙ্গে রাতে ঘুমাতে গেলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে যায়। যাদের ঘরে শিশু আছে, তারা শিশুদের নিয়ে বাসার সামনের রাস্তায় নেমে এসে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। যাদের ঘরে আইপিএস আছে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে আইপিএসেরও চার্জ থাকছে না।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর