বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীদের কাছ থেকে বিএনপির অনেক নেতা আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপণ। বরিশাল প্রেস ক্লাবে গতকাল নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে এ অভিযোগ করেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত এই স্বতন্ত্র প্রার্থী দাবি করেন, বিএনপির ভোটে ভাগ বসাতে ওই দলের নেতাদের অর্থ দিয়ে খুশি করা হচ্ছে। বিএনপির অনেকে তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান রূপণ। ছাত্রদলের একসময়ের কেন্দ্রীয় সদস্য রূপণ বলেন, বিএনপির অনেক নেতা দুই মেয়র প্রার্থীর (আওয়ামী লীগ ও জাপা) কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন। এর অডিও ক্লিপও তাঁর কাছে রয়েছে। অর্থ নেওয়া নেতাদের পরিচয় জানতে চাইলে রূপণ বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের বাসা আর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর শ্বশুরের বাসা একই এলাকায়। সাংগঠনিক সম্পাদক আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে দুলাভাই বলে ডাকেন। তিনি তাঁর অনুসারীদের নৌকায় ভোট দিতে বলেছেন। সাংগঠনিক সম্পাদকের ভাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন।
বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশ না নিলেও থেমে নেই তাদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার নির্বাচনী তৎপরতা। শুক্রবার রাতে নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডে এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নগরীর ৩০ ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাদের জড়ো করে লাঙলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নির্দেশনা দেন মহানগর বিএনপির এক শীর্ষ নেতা। ওই সভায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতা এবং লাঙল প্রার্থীর ভাই জেলা যুবদলের এক নেতাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রতিটি ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলকে নগদ ১০ হাজার করে টাকা দিয়ে তাদের লাঙলের পক্ষে কাজ করতে বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ তিন নেতা নির্দেশ দেন বলে জানান সভায় অংশ নেওয়া একাধিক নেতা।
ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাদের গোপন সভা ডেকে লাঙলের পক্ষে অর্থ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, ১৩ জুনের একটি কর্মসূচির জন্য তাঁদের ডাকা হয়েছিল। সেখানে কোনো প্রার্থীর পক্ষে তাঁদের কাজ করতে বলা হয়নি। অর্থ লেনদেনের প্রশ্নই আসে না। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাদের বরং ভোট কেন্দ্রে না যেতে বলা হয়েছে।এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ৪০ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি করছি। ওর (রূপণ) বাবারা বিএনপির প্রতি আমার ত্যাগ-বিশ্বাসে চিড় ধরাতে পারেনি। পারেনি রাজনৈতিক চরিত্র হরণ করতে। ও (রূপণ) আমার কী চরিত্র হরণ করবে?’