সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাজশাহী সিটি নির্বাচন

হাতপাখার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে পুরোদমে প্রচারণায় ঘাম ঝরাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রথমদিকে কিছুটা ঢিমেতালে হলেও এখন মাঠে সরব সব প্রার্থী। অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে আবারও নৌকায় ভোট চান সদ্য সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। তবে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বিকালে রাজশাহী মহানগরীর ২৩, ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় তিনি নগরবাসী ভোটারদের এ আহ্বান জানান। লিটন বলেন, ২০১৯ সালে রাজশাহীর উন্নয়নে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ার পরপরই সারা বিশ্বের মতো রাজশাহীতে করোনা মহামারি সংক্রমণ দেখা দেয়। তখন আমরা মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হয়।

 পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের সংকট ইত্যাদি কারণে প্রায় ১ বছর নষ্ট হয়ে যায়। মাত্র আড়াই বছরে যে উন্নয়ন করেছি, তা আপনাদের সামনে দৃশ্যমান। ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। আরও ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অল্প সময়ে যে উন্নয়ন করেছি, ঢাকা থেকে, চট্টগ্রাম থেকে, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যারা রাজশাহীতে বেড়াতে আসেন, তারা এই শহরের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বলেন, এমন ঝকঝকে তকতকে, সুন্দর আলোকিত সড়ক দেশের আর দ্বিতীয়টি নেই। শুধু দেশ নয়, দেশের বাইরেও রাজশাহীর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।

সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, আমরা উন্নয়নের একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। এবার আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। সে জন্য প্রয়োজন কর্মসংস্থান। যদিও কর্মসংস্থান দেওয়া মেয়রের কাজ নয়, এরপরও আপনাদের সন্তানদের জন্য এই দায়িত্ব আমি নিজ কাঁধে নিয়েছি। রাজশাহীতে তেমন শিল্প-কারখানা নেই। সরকারি যে কারখানাগুলো ছিল সেগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে এসে রাজশাহীতে শিল্পায়ন করতে হবে। নওদাপাড়া এলাকায় বিসিক শিল্পনগরী-২-এর কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীদের এনে শিল্প-কারখানা গড়তে হবে। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করলে আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব, তিনি যেন শিল্পপতিদের বলে দেন, রাজশাহীতে ছোট করে হলেও কিছু শিল্প-কারখানা গড়তে। এটি করতে পারলে আগামী ৫ বছরে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটি অনেক বড় কাজ, অনেক বড় দায়িত্ব, এই কাজটি আমি করতে চাই। আপনাদের সন্তানদের কর্মের ব্যবস্থা করতে চাই।

অপপ্রচারে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচন এলেই বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হয়। অপপ্রচারকারীরা বলে, আমি মেয়র নির্বাচিত হলে নাকি ঘরবাড়ি তুলে দেব, বস্তি উচ্ছেদ করে বিনোদন কেন্দ্র করব। আমি গত পাঁচটি বছর মেয়র ছিলাম, একজনের বাড়িঘরও ভাঙা হয়নি, কাউকে উচ্ছেদ করা হয়নি। আগামীতেও হবে না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন। রাজশাহীতে এই প্রকল্প এনে যাদের বাড়ি নাই, ঘর নাই, তাদের বাড়িঘর নির্মাণ করে দিতে চাই।

গণসংযোগ ও পথসভায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি নাইমুল হুদা রানা, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী সকালে নগরীর বেলদারপাড়া বৌবাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, হাতপাখার পোস্টার রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় তাদের ফেস্টুন খুলে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে। আবার ধারালো কিছু দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। বিকালে তিনি ভদ্রা ও তালাইমারী এলাকায় গণসংযোগ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর