শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাজশাহী

বিএনপির উল্টোপথে হাঁটছে জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির ঠিক উল্টোপথে হাঁটছে তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াত। বিএনপি যখন কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় নেতাদের দল থেকে বহিষ্কারের কৌশল নিয়েছে, তখন জামায়াত তৃণমূল পর্যায়ের শক্তি ব্যয় করছে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়া দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্য। এই স্থানীয় নির্বাচনকে টেস্ট কেস উল্লেখ করে জামায়াতপন্থি প্রার্থীরা বলছেন, ভোট কেন্দ্রে নিজেদের পক্ষের সর্বাধিক ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান তারা। দলীয় সমর্থন না থাকলেও বহিষ্কৃত বিএনপিপন্থি প্রার্থীরাও কাজ করছেন একই লক্ষ্য নিয়ে। দল থেকে বারবার সতর্কবার্তা পেয়েছেন। তারপরেও রাজশাহী সিটি নির্বাচনের মাঠে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের লড়াইয়ে থেকে গেছেন ১৬ জন বিএনপি নেতা। কিছুদিন আগে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের সবাইকে। স্থানীয় নির্বাচনে দলের এমন সিদ্ধান্তে খুশি নন বহিষ্কৃতরা। সাবেক যুবদল নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থী বেলাল আহমেদ বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নেই। এখানে বিএনপি তাদের সমর্থন জানাতে পারত। তিনি নিজে প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় চাপে। আগেও স্থানীয়রা তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। এখন এলাকার মানুষের সঙ্গে না থাকলে রাজনীতি করে লাভ কী। বিএনপিপন্থি এসব প্রার্থীর দাবি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে দলের বাইরেও ব্যক্তিগত ভোটব্যাংক কাজ করে। এসব ভোটারের ভোট নিজেদের পক্ষে নিশ্চিত করতে চান তারা। কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাবেক বিএনপি নেতা মির্জা পারভেজ রিপন বলেন, সব দলের মানুষই তাকে ভোট দেবেন। বিএনপিপন্থি কাউন্সিলররা যখন দ্বিধায়, তখন পুরোদমে মাঠে কাজ করছেন জামায়াতের প্রার্থীরা। এই নির্বাচনে জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নয়জন নেতা-কর্মী কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। কেন্দ্র থেকে তাদের ওপর কোনো চাপ নেই। বরং এই নির্বাচনকে টেস্ট কেস হিসেবে দেখতে চান তারা। জামায়াত নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সামাদ বলেন, দলের সমর্থন নিয়েই মাঠে কাজ করছেন। এতদিন ভোটের মাঠে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়নি। এখন মাঠে কাজ করা যাচ্ছে। জামায়াত নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থী আফজাল হোসেন বলেন, নিজেদের পক্ষের ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য। ১৩ বছর তারা মাঠে নামতে পারেননি। সরকার তাদের কোণঠাসা করে রেখেছিল। অন্তত এই নির্বাচনের মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের যে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সেটি অর্জনেও ভূমিকা রাখবে। দলগতভাবে বিএনপি নেই।

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীও সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কাউন্সিলর প্রার্থীদের এই তৎপরতা নির্বাচনে সার্বিকভাবে ভিন্ন মতের ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সহায়তা করবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজেদের জয়ের জন্য ভোটার নিয়ে যাবেন কেন্দ্রে। যেসব ভোটার কেন্দ্রে যাবেন, তারা মেয়র পদেও ভোট দেবেন। ফলে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে তার কোনো শঙ্কা নেই।

তবে বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী হয়তো ভাবছেন, তাদের নির্বাচিত করতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে যাবেন- সেটি ভুল। কেন্দ্রে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী যাবেন না। নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, জামায়াতের সঙ্গে সরকার আঁতাত করেছে। ভোটের দিন বোঝা যাবে, কেন্দ্রে কত মানুষ গেছেন। তবে বিএনপিকে ভালোবাসে এমন কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে আমাদের ভোটে বাধা দিতে বলা হয়নি। না হলে বাধাও দিতাম।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর