শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ছোটমণি নিবাসে বড়দের জায়গা, আছে প্রতিবন্ধীরাও

পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় হিমশিম সেবায়

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের ছোটমণি নিবাসে নানা সংকট। শিশুদের আশ্রয়স্থল এ প্রতিষ্ঠানে নেই পর্যাপ্ত জনবল, এমনকি বাবুর্চির পদটি নেই প্রতিষ্ঠার পর থেকে। ১৯৮৪ সালে নগরের পাঁচলাইশ থানার রউফাবাদ কলোনি এলাকায় সরকারি ছোটমণি নিবাস প্রতিষ্ঠা হয়। পিতৃমাতৃ পরিচয়হীন শূন্য-সাত বছর বয়সী পরিত্যক্ত-পাচার থেকে উদ্ধারকৃত শিশুদের এ নিবাসে লালনপালন করা হয়। কিন্তু সাত বছরের অধিক শিশু-কিশোর ও প্রতিবন্ধীদেরও হস্তান্তর করা হচ্ছে এখানে। ফলে শিশুরা যেমন মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমন সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। চট্টগ্রাম জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফরিদুল আলম বলেন, ‘ছোটমণি নিবাস সুস্থসবল শিশুদের প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পিতৃমাতৃ পরিচয়হীন এবং পরিত্যক্ত শিশুদের আদালতের নির্দেশনায় এখানে ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি থানা পুলিশ, সমাজসেবা অফিস থেকেও পাঠানো হয়। ইদানীং প্রতিবন্ধী শিশুদের পরিবার ডাস্টবিন, নালা বা পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে দিচ্ছে; তা আমাদের নজরে এলে এখানে নিয়ে আসি। কারণ কোথাও এদের রাখার মতো প্রতিষ্ঠান নেই। জনবল সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই নিবাস পুনর্নির্মাণ করা হবে। আশা করি তখন সমস্যার সমাধান হবে।’ সরেজমিনে ছোটমণি নিবাসে গিয়ে দেখা যায়, শূন্য থেকে সাত বছর বয়সী শিশুদের জন্য হলেও নিবাসে বসবাস করছে তার চেয়ে বেশি বয়সের শিশু-কিশোররা। যাদের বেশির ভাগই মানসিক ও শারীরিক সমস্যায় ভুগছে। থানা পুলিশ ও আদালত থেকেও এখানে পাঠানো হয় নানা সমস্যায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুদের। প্রতিষ্ঠানটিতে আসন রয়েছে ১০০। চলতি বছরের মে মাসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী শিশু-কিশোর মিলিয়ে আছে ৩৩ জন। তার মধ্যে স্বাভাবিক শিশু আছে মাত্র ১২ জন এবং শারীরিক-মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে ২১ জন। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, শূন্য থেকে সাত বছরের শিশু-কিশোরদের জন্য এ প্রতিষ্ঠান। সাত বছর পূর্ণ হলেই তাদের পৃথক বালক-বালিকা সরকারি শিশু পরিবারে হস্তান্তর করার নিয়ম। কিন্তু সেটা শুধু কাগজে, বাস্তবে তা হচ্ছে না। এটা সবাই জানার পরও থানা পুলিশ থেকে বারবার প্রতিবন্ধী, মানসিক এবং সাত বছরের ওপরের কিশোর-কিশোরীদের এখানে পাঠানো হচ্ছে। অথচ পাশেই প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিষ্ঠান আছে। জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে মঞ্জুরিকৃত পদ রয়েছে ১৭টি। এর মধ্যে জনবল আছে মাত্র সাতজন। আরও ১০টি পদ খালি রয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটির জন্য আবশ্যক। বিশেষ করে দুজন শিক্ষকের স্থলে আছেন একজন, কটেজ মাদার পদে একটি পদ খালি রয়েছে। একজন কম্পাউন্ডার থাকার কথা থাকলেও সে পদও শূন্য দীর্ঘদিন ধরে। এ ছাড়া এসব শিশুর দেখভাল ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য তিনটি আয়ার পদ রয়েছে, তিনটিই খালি। খালাম্মার পদ রয়েছে তিনটি, তার মধ্যে খালি একটি। অফিস সহায়কের দুটি পদের একটিই শূন্য। যে পদটি প্রয়োজন, সেই পদটিই সৃিষ্ট হয়নি এ প্রতিষ্ঠানে। বাবুর্চি না থাকায় বাইরের বাবুর্চির মাধ্যমে শিশু ও কর্মকর্তাদের রান্নার আয়োজন হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর