শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতনের তথ্য অভিযুক্তদের হাতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবীন ছাত্রী ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের কপি ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্তদের কাছেও সেই কপি থাকার কথা স্বীকার করেছেন তারা। এতে সাক্ষীদের তালিকা এবং তাদের দেওয়া তথ্যপ্রমাণাদিও রয়েছে। এজন্য সাক্ষ্য দেওয়া ছাত্রীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। উচ্চ আদালত থেকে সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের দেওয়া তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার নির্দেশনা সত্ত্বেও সাক্ষীদের তথ্য প্রকাশ্যে আসায় এ নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা তদন্ত প্রতিবেদনের একটি পৃষ্ঠা ফেসবুকে শেয়ার করেন। এরপর বিষয়টি অনেকের নজরে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে প্রতিবেদনের কপি সরবরাহ করেনি। তবে অভিযুক্তরা সবাই বিভিন্ন মাধ্যমে তা সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিযুক্ত বলেন, আদালত থেকে আমরা প্রতিবেদনের কপি সংগ্রহ করেছি। সবাই যে-যার মতো সংগ্রহ করেছে। প্রতিবেদনে মূল অংশের সঙ্গে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের তথ্য এবং যেসব কথা বলেছেন ও সংযুক্তি দিয়েছেন সেগুলোও আছে। ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের শুরুতেই প্রমাণাদি চেয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে সাক্ষ্য দানকারীদের পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে বলে জানানো হয়।

গোপনীয়তা রক্ষার নির্দেশনা দিয়েছিলেন উচ্চ আদালতও। তবে বিষয়টি গোপন রাখতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাক্ষ্য দেওয়া ছাত্রীরা। তারা নিরাপত্তা শঙ্কায় আছেন বলে জানিয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা ভুক্তভোগীকে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতনের হুকুমদাতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্য চারজন তার কথামতো ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করেন। আগামী ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘটনার সব কার্যক্রম শেষ করতে বলেছেন হাই কোর্ট। সব কার্যক্রম শেষের দিকে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, ‘আমি আদালত থেকে একটি মাধ্যমে প্রতিবেদনের কপি সংগ্রহ করেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পেজ দিয়েছি, সেখানে কারও নাম ছিল না। সাক্ষীদের গোপনীয়তা রক্ষা করা প্রশাসনের দায়িত্ব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘আমার কাছে থাকা কপি আমি খুলেও দেখিনি। আর নিরাপত্তার বিষয় আগে থেকেই দুই জেলার পুলিশ প্রশাসনকে জানানো আছে। বিষয়টি তারা ও প্রক্টরিয়াল বডি দেখবে।’

প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিওধারণের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার এবং শাখা ছাত্রলীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর