রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

নালা-ড্রেন গিলে খাচ্ছে মেগা প্রকল্পের সুফল

অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

নালা-ড্রেন গিলে খাচ্ছে মেগা প্রকল্পের সুফল

চট্টগ্রাম নগরে নালা-ড্রেন আছে ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩০২ কিলোমিটার জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের অধীন সংস্কার-সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। কিন্তু বাকি নালা-ড্রেনগুলো থেকে গেছে অবহেলায়। এসব ড্রেন দিয়ে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।

পতেঙ্গার আবহাওয়া অফিস বলছে, গতকাল বেলা ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এই অল্প বৃষ্টিতেই নগরের অনেক নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। নগরের ২ নম্বর গেট, জুবিলী রোড, তিন পুলের মাথা, মুরাদপুর, বাদুরতলা, আগ্রাবাদ, হালিশহর, অক্সিজেন, বায়েজিদ সড়ক, পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, ওয়াসা মোড়, কাতালগঞ্জ, ষোলশহর, চকবাজার, বাকলিয়া, শুলকবহর, কাপাসগোলা ও পাঠানটুলিসহ বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি জমে যায়। কাতালগঞ্জের বাসিন্দা হামিদ হোছাইন বলেন, ‘মাত্র আধঘণ্টার বৃষ্টিতেই পানি জমে গেছে। ফলে আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।’ জানা যায়, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনসট্রাকশন ব্রিগেড। বর্তমানে প্রকল্পের ৭৬ দশমিক ২৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচটি স্লুইস গেট। প্রকল্পের অধীন ৩৬টি খালের মধ্যে ২৫টির উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ প্রায় শেষ। এ ছাড়া নগরের প্রায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার ড্রেনের মধ্যে প্রকল্পের অধীন ৩০২ কিলোমিটার ড্রেন ও নালার কাজ শেষ। কিন্তু প্রকল্পের বাইরে ২১টি খাল এবং ১ হাজার কিলোমিটার নালা-ড্রেনের অবস্থা বেহাল। ফলে পানি দ্রুত প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া চউকের ১২টি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের আরও ২৩টি স্লুইস গেট নির্মাণ করার কথা। সেগুলোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। মেগা প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও নগর জলাবদ্ধতামুক্ত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নগরের সবগুলো খাল, নালা-নর্দমা ও ড্রেন পানি চলাচলের উপযুক্ত হবে। মেগা প্রকল্পের বাইরে আরও উল্লেখযোগ্য কাজ থেকে গেছে। এগুলো সম্পন্ন না করলে নগরটি জলাবদ্ধতা মুক্ত হবে না। আমরা খাল পরিষ্কার করছি। কিন্তু খাল পর্যন্ত পানিগুলো পৌঁছানোর জন্য নালা-নর্দমা ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। চসিকের প্যানেল মেয়র মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, দুই মাস ধরে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের নালা-নর্দমা ও ড্রেনগুলো থেকে মাটি অপসারণসহ পরিষ্কারের কাজ চলছে। এসব কাজ চলছে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে। চলতি মাসের মধ্যে নালা পরিষ্কারের কাজ শেষ হবে। তখন পানি দ্রুত নেমে যাবে। চউকের প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেন, কিছু জায়গায় নালাগুলো জ্যাম থাকার কারণে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। এগুলো জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের অধীন নয়। অনেকদিন বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-নালাগুলো জ্যাম হয়ে আছে। সামনের দিনগুলোতে জলাবদ্ধতা আরও কমবে।

 

 

সর্বশেষ খবর