শিরোনাম
বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডাকাত আতঙ্কে গরু ব্যাপারীরা

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

ডাকাত আতঙ্কে গরু ব্যাপারীরা

ঈদুল আজহা সামনে রেখে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকভর্তি গরু নিয়ে চট্টগ্রামের হাটে আসতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এখনো পর্যন্ত মহাসড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগ না থাকলেও ডাকাতির ভয় ও যানজটে নাকাল হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ সময় ট্রাকে থাকার কারণে কোরবানির পশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ তাদের। রবিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যাতে মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী যানবাহন না থামায় সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশনার পর থেকে এখনো পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহন থামানো কিংবা চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। উত্তরের জেলাগুলো থেকে গরু নিয়ে চট্টগ্রামে আসা একাধিক ব্যাপারী জানিয়েছেন, তাদের কোথাও চাঁদা দিতে হয়নি। আদনান রাব্বি নামের একজন গরু ব্যবসায়ী জানান, বগুড়া, নওগাঁসহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে গরু বোঝাই ট্রাক চট্টগ্রাম পর্যন্ত আনতে বিভিন্ন স্থানে যানজটে পড়তে হয়। আগে ওই যানজট পার হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঢুকতে পারলে এরপর নিশ্চিন্তে চট্টগ্রাম নগরে পৌঁছানো যেত। কিন্তু এই ঈদ মৌসুমে চট্টগ্রামে ঢোকার আগে দীর্ঘ যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে। তবে কোথাও কেউ চাঁদা দাবি করছে না। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঈদুল আজহা সামনে রেখে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে সংস্কার কাজ করার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে নাকাল হচ্ছে সাধারণ যাত্রী, গরুবোঝাই ট্রাক ও চালকরা। বিশেষ করে সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেট পর্যন্ত প্রতিদিন নিয়ম করে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত যানজট তৈরি হচ্ছে। এসব যানজট ৩-১০ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে। ফলে কোরবানির পশু অসুস্থ হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর জানিয়েছে, গত এক বছর ধরে মিরসরাইয়ে ধুমঘাট ব্রিজ থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেট পর্যন্ত মহাসড়কের ৬৬ কিলোমিটারের বিভিন্ন অংশ সংস্কার করা হচ্ছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে সংস্কার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ফৌজদারহাট এলাকায় সংস্কার কাজ চলছে। স্থানীয়রা জানান, এই সংস্কার কাজের কারণে প্রায়ই যানজট তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিন ১৫-২০ কিলোমিটার যানজট তৈরি হচ্ছে। গত কয়েকদিনে ভাটিয়ারি থেকে সিটি গেট ছাড়িয়ে নগরের ভিতরে পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট হচ্ছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেয়ে সংস্কার বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এদিকে গত কিছুদিনে ঢাকার আশুলিয়া, টাঙ্গাইলের মধুপুরসহ একাধিক স্থানে মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ডাকাতির ঘটনায় আন্তজেলা ডাকাত সরদারদের যোগসাজশ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আন্তজেলা ডাকাত দলের ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নগরীর বিবিরহাটে গরু নিয়ে আসা পাবনার ব্যাপারী হাসমত উল্ল্যাহ, নওগাঁর মুহিব ব্যাপারীসহ কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, প্রতি বছর ঈদ এলেই ডাকাতরা সক্রিয় হয়। গত কয়েক বছর ধরে প্রায়ই ঈদুল আজহার আগে মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এবারও ডাকাতির ভয় আছে। সড়কে চাঁদা দিতে হলে তাও সওয়া যায়। কিন্তু এক ট্রাক গরু যদি ডাকাতি হয়ে যায়, তাহলে একজন ব্যবসায়ী পথে বসে যাবে।

এ ব্যাপারে র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি ঢাকার অদূরে একটি এলাকা থেকে ১০ জনের একটি ডাকাত দলকে গ্রেফতার করা হয়। যারা স্থান বদল করে মহাসড়কে ডাকাতি করে। একদিন আশুলিয়া-মানিকগঞ্জ রোডে ডাকাতি করলে অন্যদিন ময়মনসিংহ রোডে ডাকাতির চেষ্টা করে। এরপর আরেকদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতির চেষ্টা করে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় অবস্থানের কারণে তারা সফল হতে পারেনি।

সর্বশেষ খবর