বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের প্রধান সংকট হলো- গণতন্ত্র নেই। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা কয়েকটি নির্বাচন করেছে, যেসব নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আবারও একইভাবে আরেকটি নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নির্যাতনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে এবং দলের প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, বিএনপি নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, ওলামা দলের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হকসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক, মিডিয়া সেলের সদস্যবৃন্দ, দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।   

তিনি বলেন, আমাদের সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতা- কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সে কারণে আমাদের দলের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি জানিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য একটি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। এখানে বিএনপিকে ক্ষমতায় নিতে চাই- এ কথাটি মুখ্য নয়, মুখ্য হচ্ছে মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করা। যে স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে ভয়াবহ এক পরিস্থিতি চলছে। পুলিশ কাস্টডিতে মানুষ মারা যাচ্ছে। সম্প্রতি আলাল নামের একজন কেয়ারটেকারকে পুলিশ হেফাজতে ১০ দিন ধরে অকথ্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। অথচ তার নামে কোনো মামলা ছিল না। সত্য কথা বলার কারণে জামালপুরে সাংবাদিক নাদিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে সুলতানা নামের একজন মহিলা কর্মচারীকে র‌্যাব হেফাজতে নিয়ে হত্যা করে মৃত্যুর পর তার নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সাগর-রুনির হত্যার বিচার দূরের কথা, এখনো চার্জশিটই দেওয়া হয়নি। এসব ঘটনা প্রচলিত মিডিয়াতেও ঠিকমতো আসতে পারে না। কারণ সত্য কথা লিখলে সাংবাদিকদের কী অবস্থা হয়, তার সর্বশেষ প্রমাণ হলো- জামালপুরের নাদিম।