শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুই মাস ২১ দিন পর বরিশালে সাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

দুই মাস ২১ দিন পর বরিশালে সাদিক

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ পরশকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল বরিশালে পৌঁছান আলোচিত সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সদ্য সমাপ্ত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক আবদুল্লাহ দীর্ঘ দুই মাস ২১ দিন পর বরিশালে ফিরলেন মহাসমারোহে। সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন ফুফাতো ভাই যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশকে। ভারতে আজমির শরিফ জিয়ারতের উদ্দেশ্যে গত ১ এপ্রিল বরিশাল ত্যাগ করেছিলেন সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহ। বিসিসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল ভারতে যান তিনি। ১১ এপ্রিল ঢাকায় ফেরেন সাদিক আবদুল্লাহ। এর আগে ১০ এপ্রিল তার পক্ষে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা। ১২ এপ্রিল মনোনয়ন জমা দেন তারা। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ কিংবা জমা দেওয়ার সময় যাননি সাদিক। ১৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় বিসিসি নির্বাচনে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পর থেকে ঢাকায় অবস্থান করেন তিনি।

 নির্বাচনের প্রাক্কালে দুবার ভার্চুয়াল সভা করে নেতা-কর্মীদের নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিলেও একবারের জন্যও বরিশাল আসেননি তিনি। ২০ এপ্রিল নৌকার প্রার্থীর সংবর্ধনা, ২৮ এপ্রিল প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন, ৩ মে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, ১৪ মে মনোনয়নপত্র জমা, ২৬ মে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা ও ৪ জুন বিভাগীয় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা এবং পক্ষকালব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা; কোথাও দেখা যায়নি মেয়র সাদিককে। ১২ জুন সিটি নির্বাচনে ভোট দিতেও আসেননি তিনি।

বিসিসি নির্বাচনের ১০ দিন পর গতকাল বরিশালে আসেন সাদিক আবদুল্লাহ। মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানান, বরিশালের সীমানায় প্রবেশ করা মাত্র বিশাল মোটর বহর নিয়ে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে স্বাগত জানান কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। পথে এয়ারপোর্ট সংলগ্ন কামিনী পাম্প, রহমতপুর ব্রিজ, সাতমাইল, গড়িয়ার পাড়সহ বিভিন্ন স্থানে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ তাকে ফুল ছিটিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। সঙ্গে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশসহ কেন্দ্রীয় নেতারা থাকায় বাড়তি উন্মাদনা ছিল নেতা-কর্মীদের মাঝে। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে নগরীর কালীবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনে প্রবেশ করেন সাদিক ও পরশ। মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসসহ সিনিয়র নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন।

সেরনিয়াবাত ভবনে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন মেয়র সাদিক। তিনি বলেন, বরিশালের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। আগামী দিনে যে কোনো মূল্যে বরিশালে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বরিশালের মানুষ রাজনীতি এবং শান্তিপ্রিয়। বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবিলা করে আগামীতে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দেন তিনি। এ সময় সাদিকের বাড়ির সামনে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী জড়ো হন। এতে কালীবাড়ি রোড অচল হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের যান চলাচল। বিকাল ৫টার পর শেখ পরশকে এগিয়ে দিতে বিমানবন্দরে যান সাদিক। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর কালীবাড়ি রোডে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং পরদিন যুবলীগের শান্তি সমাবেশ সফল করতে এসেছেন তিনি। এখন থেকে তিনি স্থায়ীভাবে বরিশালে থাকবেন। তার আগমনে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা খুশি।

বরিশালে শান্তি সমাবেশ করবে যুবলীগ : দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আগামীকাল বরিশালে শান্তি সমাবেশ করবে যুবলীগ। ওইদিন বিকালে নগরভবনের সামনে সড়কে সমাবেশ সফল করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। এরই অংশ হিসেবেই বরিশালে এসেছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সমাবেশ সফল করতে নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। সন্ধ্যার ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ফিরে গেলেও সমাবেশ সফল করতে বরিশালে রেখে গেছেন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজাহারুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় চার নেতাকে।

মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন জানান, যুবলীগের শান্তি সমাবেশ সফল করতে সন্ধ্যায় প্রস্তুতি সভা করে মহানগর যুবলীগ। সভায় তৃণমূল কর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর