শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাদ্যপণ্য মজুদে ১৪ বছরের দন্ড

সংসদে নতুন বিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাদ্যপণ্য মজুদে ১৪ বছরের দন্ড

সরকারের নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যপণ্য মজুদ করলে যাবজ্জীবন বা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল-২০২৩’ উত্থাপিত হয়েছে। এ আইনে পলিশিং ও কাটিংয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে তৈরি মিনিকেট নামে বাজারে কোনো প্রকার চাল বিক্রি ও সরবরাহ করাকে আইনগতভাবে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ জন্য দুই বছর কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দ- প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীর শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের বৈঠকে বিলটি উত্থাপন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ১৯৫৬ সালের ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট এবং ১৯৭৯ সালের ফুডগ্রেইনস সাপ্লাই (প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল একটিভিটি) অর্ডিন্যান্স রহিত করে নতুন এ আইনটি সংসদে আনা হয়েছে।

বিলে খাদ্যপণ্য/খাদ্যদ্রব্য বলতে যে কোনো প্রকার দানাদার খাদ্যদ্রব্য যথা- চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদিকে বোঝানো হয়েছে। আইনের উদ্দেশ্য পূরণে দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ‘খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ ছাড়া কিছু অপরাধের বিচার মোবাইল কোর্টে করার বিধানও এ আইনে রয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুদ করলে বা মজুদ সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে, তা হবে অপরাধ। এ অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য। যার শাস্তি হবে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড। তবে এরূপ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ব্যতীত মজুদ করেছিলেন, তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব তিন মাস কারাদন্ড ও অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে, তা হবে একটি অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দ । বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক প্রদত্ত বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এরূপ চিহ্নযুক্ত সিল ব্যতীত সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় করলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এর সাজা সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড। এ ছাড়া খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশ্রণ করে উৎপাদন ও বিপণন বা লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা করলেও একই শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

কৃষকদের খেলাপি ঋণ ১৪০ কোটি টাকা : পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য সংসদকে জানিয়েছেন, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীনে সমবায় অধিদফতর ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) অধীন সমবায়ী কৃষকদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৪০ কোটি ৩৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে সমবায়ের ৩৯ কোটি ৫৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং বিআরডিবির ১০০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। গতকাল সংসদের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

ঢাকার জনসংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ, ওয়াসার গ্রাহক ৩ লাখ ৮৭ হাজার : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সংসদে জানিয়েছেন, ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ। যারা সবাই ঢাকা ওয়াসার পরিষেবা গ্রহণ করেছে। তবে ওয়াসার মিটারভিত্তিক গ্রাহক সংখ্যা ৩ লাখ ৮৭ হাজার। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, ঋতুভেদে রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২১০ থেকে ২৬০ কোটি লিটার। যার পুরোটাই ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদন সক্ষমতা ২৭৫ থেকে ২৮০ কোটি লিটার।

সাড়ে ৩ লাখ কিলোমিটার সড়ক পাকা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ : সরকারদলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতায় সারা দেশের ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫২ কিলোমিটার সড়ক পাকা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত আছে। বর্তমানে সারা দেশে পাকা সড়কের দৈর্ঘ্য ১ লাখ ৪০ হাজার ৬৯৯ কিলোমিটার এবং কাঁচা সড়কের দৈর্ঘ্য ২ লাখ ১২ হাজার ৬৫৩ কিলোমিটার। কাঁচা (মাটির) সড়ক পাকাকরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে কাঁচা সড়কের গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে কাঁচা সড়ক পাকা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর