সোমবার, ৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বরিশালে ডেঙ্গুর প্রকোপ, শেবাচিমে সর্বাধিক রোগী

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশালে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ঈদের দিন ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন চলতি মৌসুমের সর্বাধিক ৪১ জন ডেঙ্গু রোগী।

হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গতকাল ডেঙ্গুর নানা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪১ জন রোগী। এর আগে শনিবার নতুন ভর্তি হওয়া ১০ জনসহ চিকিৎসাধীন ছিলেন ২৭ জন ডেঙ্গু রোগী। শুক্রবার একদিনে ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে ২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত একজন রোগীর মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবার নয়জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে গত বুধবার নতুন ভর্তি হওয়া ১৩ জনসহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী।

গতকাল হাসপাতালের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার মেডিসিন ওয়ার্ডের নোংরা অপরিচ্ছন্ন দুর্গন্ধময় পরিবেশে মেঝেতে বিছানায় শুয়ে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। আগে ডেঙ্গু রোগীদের মশারি সরবরাহ করা হলেও এবার ডেঙ্গু লক্ষণের রোগীদের মশারি দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এক রোগীর স্বজন সাইফুল ইসলাম জানান, মেডিসিন ওয়ার্ডে হাসপাতালের চিত্র নেই। ধারণ ক্ষমতার অধিক রোগী থাকায় শয্যা, মেঝে এবং করিডোর ছাড়িয়ে বারান্দায় শুয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। তাজুল হাওলাদার নামে এক রোগীর স্বজন জানান, ঈদের ছুটিতে অসহনীয় পরিবেশে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চলছে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা। এ সময় বড় কোনো ডাক্তার ওয়ার্ডে পা ফেলেননি। ডেকেও ডাক্তার-নার্স পাওয়া যায়নি।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রেজোয়ানুল আলম রায়হান জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তদের তীব্র জ্বর ও মাথা ব্যথা, চোখের কোটরে (পেছনে) ব্যথা, শরীর অবশ লাগা, শারীরিক দুর্বলতা, শরীরে র‌্যাশ পড়া এবং দাঁতের মারি ও মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়ে থাকে। ডেঙ্গু রক্তের প্লাটিলেট ভেঙে ফেলে। এতে রোগী আরও দুর্বল হয়ে যায়। ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা গেলে রোগীকে একটু পর পর বেশি বেশি পানি পান এবং ভিটামিন ‘সি’ খাওয়াতে হবে। রোগীকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্রামে রাখতে হবে। সন্দেহ হলে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষায় সমস্যা দেখা দিলে হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া বেশিরভাগ রোগী সাসপেক্টেড (সন্দেহজনক)। পরীক্ষায় যাদের ডেঙ্গুর লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের বেডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ডেঙ্গু রোগীর যথাযথ চিকিৎসায় কর্তৃপক্ষ সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর