বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বরিশালে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু

আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, সাধারণ ওয়ার্ডেও রাখা হচ্ছে রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু

বরিশালে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা। গতকালের রিপোর্ট অনুযায়ী সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন চলতি মৌসুমের সর্বাধিক ৪৬ রোগী। চিকিৎসাধীন রোগীদের রয়েছে নানা অপ্রাপ্তি আর বঞ্চনার অভিযোগ। তবে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম।

হাসপাতালের সবশেষ গতকালের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী, সোমবার ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের চারটি মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩০ রোগী। ওইদিন আরও ২৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি যান ১৩ রোগী। সে হিসাবে সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৬ জন। যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ সংখ্যক। এর আগে রবিবার চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪১ জন, শনিবার ২৭ জন, শুক্রবার ৩৭ জন, বৃহস্পতিবার ৩০ জন এবং গত বুধবার চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩০ ডেঙ্গু রোগী।

চিকিৎসাধীন রোগীরা জানান, চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মশারি দেওয়া হতো না। দুই দিন আগে বাংলাদেশ প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশের পর কিছু সংখ্যক ডেঙ্গু রোগীকে মশারি দেওয়া হলেও এখনো অনেকে মশারিবিহীন চিকিৎসাধীন আছেন। তারা বলেন, এত বড় হাসপাতালে ওয়ার্ডগুলোতে হাসপাতালের চিত্র নেই। মেঝে বাথরুম সব নোংরা পুতিদুর্গন্ধময়। ডাক্তার-নার্সরাও রোগীর তেমন খোঁজ-খবর নেয় না। রোগীর স্বজন রাবেয়া বেগম জানান, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে টয়লেটের দরজার ছিটকানি নেই। একটা বাতিও নেই। অসহনীয় অবস্থা। ফ্লোরে ময়লা-নোংরা-দুর্গন্ধ। এতে রোগীর আরও সমস্যা হচ্ছে। জাকিয়া আক্তার নামে এক রোগীর স্বজন জানান, হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু এই হাসপাতালে রোগীবান্ধব পরিবেশ নেই।

মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী ও সাধারণ রোগীরা জানান, ডেঙ্গু মশাবাহিত রোগ। অথচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেক রোগী এখনো মশারি পায়নি। মশারিবিহীন ডেঙ্গু রোগীদের শরীরে বসা মশা অন্য কারোর শরীরে বসলে তারও ডেঙ্গুর ঝুঁকি থাকে। মেডিসিন ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগী রাখায় আতঙ্কে রয়েছেন ওই ওয়ার্ডের সাধারণ রোগী এবং তাদের স্বজনরা। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে স্থান সংকটের কারণে ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা স্থানে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম। সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে ডেঙ্গু রোগীদের যাবতীয় সমস্যা সমাধানসহ তাদের চিকিৎসায় সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে ডেঙ্গু সন্দেহে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫১ রোগী। জুন মাসে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৪৯ জন। জুনের শেষ ভাগ থেকে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর