মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

এবার প্রতিদান চায় খুলনা

নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তালুকদার আবদুল খালেক, দায়িত্ব নেবেন ১৪ নভেম্বর

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

এবার প্রতিদান চায় খুলনা

খুলনা সিটি করপোরেশনে (কেসিসি) মেয়র হিসেবে ৩ জুলাই তৃতীয়বারের মতো শপথ নিয়েছেন তালুকদার আবদুল খালেক। আগামী ১৪ নভেম্বর মেয়রসহ নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা দায়িত্ব নেবেন। তবে তার আগেই নির্বাচনকালীন সিটি মেয়রের দেওয়া উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। জানা যায়, আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব না পেলেও তালুকদার খালেক প্রায় প্রতিদিনই করপোরেশনের চলমান উন্নয়ন কর্মকা  সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। গতকাল সিটি মেয়র আড়ংঘাটা শলুয়া কেসিসি দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প ও কুয়েট রোডের ড্রেনেজ নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেছেন।

তিনি পরিচ্ছন্ন, পরিবেশবান্ধব খুলনা গড়তে এবার শুরু থেকেই পরিকল্পিত উন্নয়নের কথা বলছেন। নির্বাচনের আগে ৬ জুন তিনি জলাবদ্ধতা নিরসন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মাদকমুক্ত নগরীসহ ৪০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন।

এর মধ্যে পরিবেশবান্ধব নগরায়ণ, পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টি, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ড্রেন পরিষ্কার, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, সূর্যোদয়ের আগেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, পথচারীবান্ধব ফুটপাত, সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, সিভিক সেন্টার গড়ে তোলা, বিনিয়োগ উপযোগী নগরী, হোল্ডিংট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, জলাশয় সংরক্ষণ, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, মিডিয়া সেন্টার চালু, স্মার্ট ও ডিজিটাল খুলনা গড়া, নগর তথ?্যকেন্দ্র চালু, পরিকল্পনা গ্রহণে পরামর্শক কমিটি গঠনের কথা বলা হয়। এ ছাড়া কেসিসিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, শিশুদের সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা ও সিটি করপোরেশন এলাকা সম্প্রসারণে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সম্পাদক কুদরত-ই খুদা বলেন, ২০১৮ সালে সিটি মেয়র ৩১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক প্রতিশ্রুতিই পূরণ হয়নি। সড়ক সংস্কারের কাজে দীর্ঘসূত্রতায় জনগণ অতিষ্ঠ হয়েছে। জলাবদ্ধতা দূরীকরণও সম্ভব হয়নি। মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া বিক্ষিপ্ত সংস্কারে জলাবদ্ধতা দূর হবে না। তিনি বলেন, খুলনা সিটিতে এখন প্রায় ১৭ লাখ মানুষের বসবাস। তাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিরাট চাহিদা। কেসিসির উদ্যোগে সবার জন্য জেনারেল চিকিৎসা পুরোপুরি চালু হয়নি। অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। তবে সিটি মেয়র তালুকদার খালেক বলেন, ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কাজ শুরু হয়েছিল। করোনার কারণে শেষ করতে পারিনি। এখনো ২৫০-৩০০ রাস্তা, ড্রেন ও খালের কাজ চলমান। আগামী ডিসেম্বরে বা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। প্রকল্প শেষ হলে উন্নয়নের নতুন চিন্তাভাবনা করব। চলমান কাজ শেষ হলে খুলনার দৃশ্যপট বদলে যাবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ইতোমধ্যে আরও প্রায় ৫০০ কোটি টাকার আলাদা জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব মোকাবিলা ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। যেটা এখনো শুরু করা হয়নি। জাতীয় বাজেটেও এবার প্রায় ৫০০ কোটি টাকা চলমান প্রকল্পে ধরা আছে। তিনি বলেন, ৫০০ কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে নগরীর ড্রেনেজ সংস্কার, পাম্প হাউস, দৌলতপুর বাজার সংরক্ষণ, শহর রক্ষাবাঁধ, ২৪টি পুকুর খনন ও পার্ক নির্মাণ করা হবে। নদীকেন্দ্রিক বিনোদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, এরই মধ্যে ময়ূর নদের আট কিলোমিটার খননের দরপত্র হয়েছে। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডস সরকারের সঙ্গে ময়ূর নদ খননের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তারা ময়ূর নদ পুরাটা কাটবে ও দুই পাশে সুন্দর ওয়াকওয়ে নির্মাণ করবে। 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর