মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের ৩৬ লাখ টাকা কম্পিউটার অপারেটরের পকেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাল-জালিয়াতি করে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ভেটেরিনারি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৩৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ইয়াসিন ফিরোজের বিরুদ্ধে এ অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নারায়ণগঞ্জের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে গতকাল তার বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক আলম মিয়া। মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ইয়াসিন ফিরোজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত শ্রীনগর ভেটেরিনারি হাসপাতালের চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাধারণ ভবিষ্যতের হিসাবের তারতম্য করে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং পাঁচ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অগ্রিম বাবদ ৪ লাখ ৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ইয়াসিন ফিরোজ ২০০৫ সালের ২৬ মে শ্রীনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদান করেন। তিনি ওই দফতরে অন্যান্য কাজের সঙ্গে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বিলসহ আনুষঙ্গিক হিসাবরক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। শ্রীনগর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রক্ষা করতেন। দুদক অনুসন্ধান করে দেখে- উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে উচ্চতর গ্রেডপ্রাপ্ত হন এবং তাদের বেতন বৃদ্ধি হয়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন-ভাতার বিল যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা করা হয়। এ সময় ইন্টিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম (iBASS++) পদ্ধতি চালু হওয়ায় ওই বিলগুলো ফিক্সেশন জটিলতায় পড়ে এবং তাদের বেতন-ভাতার বিল ম্যানুয়ালি করার প্রয়োজন পড়ে। ইয়াসিন ফিরোজ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিলগুলো হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে পাস করিয়ে নিয়ে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন। তিনি ভেটেরিনারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট কে এম সোহেল হাসানের ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট নাসির উদ্দিন মিঞারও ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ভেটেরিনারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট মাকসুদুর রহমান খানের ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ভেটেরিনারি কম্পাউন্ডার আবদুল লতিফ মিয়ার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা তাদের পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন।

এ ছাড়া বেতন-ভাতার বিলের ট্রেজারি কপি ও দাফতরিক কপি তথা একুইটেন্স রেজিস্টারে ভবিষ্যৎ তহবিল হিসাবে মাসিক চাঁদার পরিমাণে তারতম্য করে কে এম সোহেল হাসানের ৩৬ হাজার টাকা, নাসির উদ্দিন মিঞার ৫২ হাজার টাকা, মাকসুদুর রহমান খানের ৫২ হাজার টাকা, আবদুল লতিফ মিয়ার ২৪ হাজার টাকা এবং ভেটেরিনারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট আবদুল লতিফ আকন্দের ২ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ মোট ৪ লাখ ৪ হাজার টাকা তাদের সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলে জমা না করে আত্মসাৎ করেন ইয়াসিন ফিরোজ। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফ সাদেক জানান, অনুসন্ধান শেষে ২৬ জুন ইয়াসিন ফিরোজের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর