বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

রেড জোনে চট্টগ্রামের ১০ এলাকা

বর্ষা এলেই নগরজুড়ে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

রেড জোনে চট্টগ্রামের ১০ এলাকা

চলতি বর্ষা মৌসুমের প্রথম মাস আষাঢ় শেষ পর্যায়ে। তবে এখনো সেভাবে বৃষ্টি না হওয়াকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন বন্দর নগর চট্টগ্রামের ১০ এলাকার বাসিন্দারা। কারণ চলতি বর্ষা মৌসুমে অন্যান্য এলাকায় জলাবদ্ধতা না হলেও এসব স্থানে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বর্ষায় নগরীর ১০ এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও অন্যান্য এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা নেই। সেই হিসেবে নগরের চাক্তাই ডাইভারশন খাল, হিজলা খাল ও বাকলিয়া খাল এলাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের কাজ করছি। এর মধ্যে ১৬টির কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। ৯টির কাজ মাসখানেকের মধ্যে শেষ হবে। বাকি ১১টির মধ্যে কয়েকটি খালের কাজ চলছে। এগুলো তুলনামূলকভাবে অন্য খালের চেয়ে বড়। তার মধ্যে মির্জা খাল, চাক্তাই খাল, ত্রিপুরা খাল, গয়নাঝড়া খাল, মহেশখাল, বাকলিয়া খাল, হিজলা খাল, শীতল ঝরনা খাল, নোয়া খাল, বির্জা খাল ও জামালখান খাল অন্যতম। এসব খালের মধ্যে চাক্তাই খাল, হিজলা খাল, বাকলিয়া খাল এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ এখনো হয়নি। যার কারণে এসব এলাকায় আমরা সেভাবে কাজ করতে পারিনি। ফলে এসব এলাকায় বর্ষায় জলাবদ্ধতা হতে পারে।’ তিনি বলেন, যে সব খালে এখনো ভূমি অধিগ্রহণ হয়নি, সেটি করার জন্য সিডিএ এবং আমরা কাজ করছি। যখন প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছিল, তখন জায়গার ক্ষতিপূরণ ছিল দেড়গুণ, এখন সেটি হয়েছে তিনগুণ। যদি আরডিপিপি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয় তাহলে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ আরও ত্বরান্বিত হবে এবং জনগণও সুফল পাবে। তবে যে সব এলাকায় কাজ করেছি সেখানে জলাবদ্ধতা সেভাবে আর হবে না। প্রবাহের সময়টুকু পর্যন্ত পানি জমে থাকতে পারে। বৃষ্টি হওয়ার পর পানি যাওয়ার জন্য যে সময়টুকু দরকার, সে সময় পর্যন্ত পানি থাকবে। তবে তাকে জলাবদ্ধতা বলা যাবে না। এটা সব দেশেই আছে। যাকে বলা হয়ে থাকে ‘সারফেস রানঅফ’। এ ছাড়া আমাদের জনগণকে সচেতন হতে হবে, যাতে খালে পানি চলাচলে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়। বিশেষ করে খাল, নালা ও ড্রেনে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। যদি পানি প্রবাহ সঠিক থাকলে জলাবদ্ধতা হবে না। জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খালের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টির কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। তারপরও চলতি বর্ষায় নগরীর চাক্তাই ডাইভারশন খাল-সংলগ্ন ফুলতলা বাজার, রসুলবাগ আবাসিক এলাকা, বাকলিয়া এক্সসেস রোডের সৈয়দ শাহ ওয়াপদা, মিয়াখান নগরের ইসহাক সওদাগরের পোল, তক্তার পোলের আশপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে। হিজলা খাল-সংলগ্ন কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, বাকলিয়ার রাহাত্তারপুল, নুর নগর হাউজিং সোসাইটি এলাকায় এ বছর বর্ষায় জলাবদ্ধতা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এসব এলাকার বাইরে বৃষ্টির পানি দীর্ঘক্ষণ থাকবে না। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএর ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন ও ব্যয় বাড়িয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা যায়। তবে এখনো সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন মিলেনি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করে সিডিএ।

এরপর ২৮ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর