বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে দরপত্রে অনিয়মে প্রকৌশলীর নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বড় বনগ্রাম মডেল সরকারি স্কুল ভবন নির্মাণকাজের দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহী শিক্ষা প্রকৌশল দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজার বিরুদ্ধে এ অভিযোগে উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই স্কুল ভবন নির্মাণকাজের দরপত্র কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। সেই সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম রেজাকে কারণ দর্শাতে বলেছেন। অভিযোগ উঠেছে, একটি অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ওই কাজটি দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, নগরীর বড় বনগ্রাম এলাকায় সরকারি মডেল স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য ২৩ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার ৩১১ টাকা ব্যয় ধরে গত বছরের মে মাসে রাজশাহী শিক্ষা প্রকৌশল দফতর থেকে প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে না পেরে ওই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে আবারও দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পাঁচ ঠিকাদার সিডিউল সংগ্রহ করেন। চার ঠিকাদার দরপত্রে অংশ নেন। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর দরপত্র খোলা হয়।

এরপর মূল্যায়ন করে ওই দরপত্র কমিটির আহ্বায়ক ও রাজশাহী শিক্ষা প্রকৌশল দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজা সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান টিবিএল-এমই-আর অ্যান্ড জেভি পাবলিক প্রকিউরম্যান্ট (পিপিআর) অনুযায়ী দরপত্র ডকুমেন্টটি সঠিকভাবে দাখিল করা হয়নি উল্লেখ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত পেতে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) মহাপরিচালকের মতামত জানতে চেয়ে এ বছরের ১৭ জানুয়ারি চিঠি দেন। সেই চিঠি পেয়ে পিপিআর অনুযায়ী কার্যাদেশ দেওয়ার জন্য সিপিটিইউ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজা টিবিএল-এমই-আর অ্যান্ড জেভিকেই কার্যাদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বিষয়টি জানতে পেরে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা মিম ডেভেলপার নামে আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে সিপিটিইউর রিভিউ বোর্ডে আপিল করেন। আপিলের শুনানি শেষে সিপিটিইউর রিভিউ প্যানেল ৮ মে টিবিএল-এমই-আর অ্যান্ড জেভি নামের ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অযোগ্য ঘোষণা করে মিম ডেভেলপারকে কার্যাদেশ দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু এ নির্দেশ অমান্য করে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজা টিবিএল-এমই-আর অ্যান্ড জেভিকেই কার্যাদেশ দেওয়ার চিঠি ইস্যু করেন ৪ জুলাই। এ ঘটনায় মিম ডেভেলপারের স্বত্বাধিকারী ফজলুর রহমান তারেক ৮ জুলাই উচ্চ আদালতে মামলা করেন। উচ্চ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ওই স্কুল ভবন নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়ার সব কার্যক্রম স্থগিতের পাশাপাশি নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজাকে কারণ দর্শাতে বলেন।

রাজশাহী শিক্ষা প্রকৌশল দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজা বলেন, সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দিলে সরকারের ৬৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। তাই দরপত্র কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাকেই কার্যাদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিপিটিইউ-এর নির্দেশে স্পষ্ট করা হয়নি কাকে কাজ দিতে হবে, তাতেই প্রথম নিম্ন দরদাতাকেই কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর