শিরোনাম
রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনায় অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিকের ছড়াছড়ি

প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ রোগীরা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা শহর ও শহরতলিতে অনুমোদনবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বেড়েছে। ভালো চিকিৎসা পাওয়ার আশায় রোগীরা এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গিয়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। ভুয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে হয়রানি, সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকা ও চিকিৎসায় অবহেলায় মাঝে মধ্যেই রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। জানা যায়, ৫ জুন চিকিৎসা অবহেলায় খুলনার তেরখাদায় আশার আলো ক্লিনিকে এক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। ক্লিনিকে অপারেশনের পরপর নবজাতকের মৃত্যু, এর তিন ঘণ্টা পর প্রসূতির মৃত্যু হয়। অপারশেনের সময় সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ করেছে প্রসূতির পরিবার। স্বাস্থ্য বিভাগের মনিটরিংয়ের অভাবে শহরের অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো অনুমোদনহীন হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। ভালো চিকিৎসার কথা বলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে নগরীর বয়রা এলাকায় বাণিজ্য করছে এক ডজনেরও বেশি অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সর্বশেষ ১২ জুলাই খুলনা জিরোপয়েন্টে অনুমোদনহীন সুন্দরবন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে অনিয়মের অভিযোগে ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড ও ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আল-আমিন জানান, ক্লিনিকটিতে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক নেই, অপারেশন থিয়েটারে সমস্যা ছিল, অপারেশন করা হলেও ব্যবস্থাপত্রে চিকিৎসকের স্বাক্ষর নেই। রোগীদের হাসপাতালের স্টাফ-কর্মচারীরাই ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ লিখে দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে খুলনা শহর ও শহরতলিতে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে ৩৬৭টি। ২০২১ সালে খুলনা মহানগরীতে বেসরকারি ক্লিনিক ছিল ৮৪টি এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছিল ৯৬টি। ৯টি উপজেলায় ক্লিনিক ছিল ৪৮টি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছিল ৭০টি। গত দুই বছরে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বেড়েছে ৬৯টি। বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, নিবন্ধনবিহীন এবং ডাক্তার-নার্স না থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২০২২ সালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের সড়কে ও সোনাডাঙ্গা এলাকার ১২টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন পপুলার ডায়াগনস্টিক, সাউথ সিটি ডায়াগনস্টিক, ডেল ইউ, সিটি ম্যাক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ম্যাক হেলথ কেয়ার সেন্টারকে লাইসেন্স না থাকায় তাৎক্ষণিক বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

নগরীর ৩৯টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নেই। সেগুলোকে বন্ধ করার জন্য চিঠি দিয়ে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. আখতারুজ্জামান জানান, গত দুই সপ্তাহে কয়েকটি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করা হয়েছে। যে সব ক্লিনিক নিয়ম মানছে না তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। একটি ক্লিনিকে শিফট অনুসারে তিনজন চিকিৎসক থাকার কথা কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তা পাওয়া যায় না। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার, বেডসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা আছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর