মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাড়ছে পানি, ডুবছে নিম্নাঞ্চল

সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপরে

প্রতিদিন ডেস্ক

বাড়ছে পানি, ডুবছে নিম্নাঞ্চল

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট। দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে বরিশালের তজুমুদ্দিন পয়েন্টে সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার (২.২২ মিটার) ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-

বরিশাল : বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন নদীর পানি বেড়েই চলেছে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গতকাল দুপুরে তজুমুদ্দিন পয়েন্টে সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার (২.২২ মিটার) ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ভোলার দৌলতখান উপজেলায় সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, ভোলা খেয়াঘাট এলাকায় তেঁতুলিয়া নদীর পানি  বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, বরিশালের হিজলা পয়েন্টে ধর্মগঞ্জ নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, বিষখালী নদীর ৪টি পয়েন্টে যথাক্রমে ঝালকাঠীতে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, বেতাগী পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, বরগুনা পয়েন্টে ২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও পাথরঘাটা পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপুর পয়েন্টে বলেশ্বর নদীর পানি গতকাল দুপুর ১টায় ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উমেদপুর পয়েন্টে কঁচা নদীর পানি গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় প্রবাহিত হয়েছে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, আগামী অমাবশ্যা পর্যন্ত নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

পাবনা : পাবনায় পদ্মা ও যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল।  হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, গতকাল পদ্মা নদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১০ দশমিক ০৩ মিটার, একই স্থানে রবিবার পরিমাপ করা হয়েছিল ৮ দশমিক ৩৫ মিটার। পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমা রয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ মিটিার। অপরদিকে যমুনা নদীর মথুরা পয়েন্ট সকাল ৯ টায় ৮ দশমিক ৪০ মিটার পরিমাপ করা হয়। রবিবার এই পয়েন্টে ৮ দশমিক ৩৫ মিটার পরিমাপ করা হয়।

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘর এখনও তলিয়ে থাকায় বানভাসীদের দুর্ভোগ রয়েছে। গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। চরের ও দ্বীপচরের ৪৫টি ইউনিয়নের প্রায় ১৮৫টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক বানভাসী মানুষের জীবন যাপন এখনও স্বাভাবিক হয়নি। গত এক সপ্তাহ যাবত নদ-নদী তীরবর্তী ও চর এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে এসব মানুষজনের।

লালমনিরহাট : তিস্তা নদীর পানি কমলেও পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি কমেনি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তার ১৩টি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এদিকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। তিস্তার বাম তীরে সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার কুটিরপাড়, চন্ডিমারী, বালাপাড়া এলাকায় নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরইমধ্যে ১৭টি বসতবাড়ি ও বেশ কিছু ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

রংপুর : সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বন্যায় রংপুর বিভাগে ১৪টি প্রথমিক বিদ্যালয় তিস্তা নদীসহ অন্যান্য নদী গর্ভে চলে গেছে। বন্যার কারণে ৯৭টি বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে এবং ৬৭ প্রথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে তিস্তা নদী ভাঙনের হুমকিতে থাকায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লহ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মালামালসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী জায়গায় পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষকরা।

 

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর