টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তিল চাষ। চরের মাটি প্রচুর পলি যুক্ত হওয়ায় কম পরিশ্রমে তিলের ভালো ফলন পাওয়া যায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছরও তিলের বাম্পার ফলন হবে। বাজারে তিলের চাহিদাও রয়েছে অনেক। ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তিল চাষিদের সংখ্যা। যমুনার ভাঙনে সব হারানো কৃষকরা তিল চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন বুনছেন।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলে তিলের আবাদ ভালো হয়। চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৩ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। কিছুদিনের ভিতরে তিল কাটা হলে এখান থেকে ৫ হাজার ৫০০ মে.টন তিল উৎপাদন হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর তিল চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা, রোগবালাই দমনে সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে তিল চাষিদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল সদর উপজেলা, কালিহাতী, ভূঞাপুর ও গোপালপুর উপজেলায় যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চরে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি তিলের আবাদও হয়েছে। যত দূর চোখ যায়, শুধু তিলের সবুজ গাছের সমাহার। বেশ কিছু অংশে তিল পরিপক্ব হয়ে উঠেছে। কয়েক দিনের মধ্যে সংগ্রহ করবে চাষিরা। বিঘাপ্রতি ৫ থেকে ৬ মণ তিল পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, যমুনার চরাঞ্চলে সারা বছর নানা ধরনের ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। চলতি বছর তিলের বাম্পার ফলনের আশা করছেন জেলা কৃষি অফিস ও কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ও তিল ঘরে তুলতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন চরাঞ্চলের তিল চাষিরা। যমুনা চরের তিল চাষি সদর উপজেলার চরপৌলী এলাকার শাহেদ আলী, বাচ্চু মিয়া, ছোরহাব মিয়াসহ অনেকেই জানান, আগের তুলনায় চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে তিলের আবাদ বেশি হয়েছে। তিল চাষ সহজ ও লাভজনক। জমির মাটি সমান করে বীজ ছিটানোর তিন মাস পর সেচ, সার, কীটনাশক ছাড়াই তিল ঘরে তোলা যায়। তিল চাষি সামান আলী বলেন, ১ একর জমিতে তিল চাষ করেছি। আশা করছি বিঘাপ্রতি ৫-৬ মণ করে তিল পাব। তিলের দামও ভালো, ৩ হাজার থেকে ৩৫০০ টাকা মণে বিক্রি করা যায়। আমাদের সরকারিভাবে আরও সহযোগিতা করলে তিল চাষের আবাদ বাড়াব। টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাসার বলেন, তিল একটি তৈলজাত ফসল। যা আমাদের দেশে আগে খুব কম চাষ করা হতো। তিল অপেক্ষাকৃত কম উর্বর জমিতেও ফলানো সম্ভব। আমরা চাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছি।
